দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২২:২৫

কি অভিযোগে তদন্ত শুরু টেলিগ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে! ফ্রান্স ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা

পাভেল দুরোভকে শনিবার সন্ধ্যায় প্যারিসের ঠিক বাইরে লে বুর্গেট বিমানবন্দরে আটক করা হয়। ছবি: আলবার্ট গিয়া/রয়টার্স

ইন্সট্যান্ট মেসেজিং সেবা প্রদানকারী অ্যাপ্লিকেশন ‘টেলিগ্রাম’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পাভেল দুরভের বিরুদ্ধে এবার আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে ফান্সের পুলিশ। পুলিশ হেফাজত থেকে আপাতত মুক্তি মিললেও এখনই ফ্রান্স ত্যাগ করতে পারবেন না তিনি। সপ্তাহে দু’বার পুলিশ স্টেশনে দিতে হবে হাজিরাও। বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে ফরাসি প্রসিকিউটর এ তথ্য জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্যারিসের সন্নিকটে লো বোর্গেট বিমানবন্দর থেকে ফরাসি পুলিশ দুরভকে গ্রেফতার করে।

এর পর গতকাল (বুধবার) তাঁকে প্যারিসের আদালতে হাজির করার আগ পর্যন্ত ৯৬ ঘন্টা তিনি পুলিশের হেফাজতেই ছিলেন। রাশিয়ান বংশোদ্ভূত দুরভের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আপাতত ৫.৫৬ মিলিয়ন ডলারের (৫ মিলিয়ন ইউরো) বিনিময়ে জামিন মিললেও এই মুহূর্তে ফ্রান্স ছেড়ে অন্য কোন দেশে যেতে পারবেন না তিনি। রিমান্ডে নেওয়া না হলেও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকবেন ৩৯ বছরের এই ধনকুবের। পাশপাশি জামিনে থাকাকালীন প্রতি সপ্তাহে দু’বার ফ্রান্সের পুলিশ স্টেশনে তাঁকে রিপোর্ট করতে হবে। পাভেল দুরভের বিরুদ্ধে অভিযোগ দুরভের প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের লো-মডারেশন নীতির কারণে অ্যাপটিকে ব্যবহার করে সংঘটিত সন্দেহজনক বিভিন্ন অপরাধে দুরভের দায় ও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ফরাসি প্রসিকিউটরের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অবৈধ লেনদেন ও অর্থ পাচারের মতো সংগঠিত অপরাধে দুরভ জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ তাদের। পাশাপাশি সন্দেজনক অপরাধীদের তথ্য ও মেসেজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের সাথে শেয়ার না করারও অভিযোগ রয়েছে দুরভের বিরুদ্ধে। ১৫ বিলিয়নেরও বেশি সম্পদের মালিক দুরভের বিরুদ্ধে এবার এই সকল অভিযোগেরই তদন্ত করবে ফরাসি পুলিশ।

এদিকে দুরভ আটক হবার পর থেকেই বাক-স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে ইউরোপে। বিশেষ করে ইউক্রেন ও রাশিয়ায় টেলিগ্রাম অ্যাপটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অনেকের কাছেই এই অ্যাপটি কর্তৃপক্ষের নজরদারি এড়িয়ে স্বাধীনভাবে কথা বলার ও তথ্য আদানপ্রদানের একমাত্র মাধ্যম। স্বাভাবিকভাবেই পাভেল দুরভের আটক হবার সংবাদ প্রকাশের পর নিজেদের বাক-স্বাধীনতার প্রশ্নে উদ্বিগ্ন টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের অনেকেই।

পাশাপাশি এটাও সত্য যে, টেলিগ্রাম অ্যাপটি ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি, অর্থ জালিয়াতি ও পাচার, মাদক পাচারসহ ভুল ও অপতথ্য প্রচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। তাই কেবলমাত্র বাক-স্বাধীনতার মতো মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে বিবেচনা করা অনেকাংশেই একপাক্ষিক হয়ে যায়। নিঃসন্দেহে পক্ষ এখানে দুটি, কিন্তু দু’পক্ষের মাঝে বিদ্যমান রেখাটি বেশ ঝাপসা ও অস্পষ্ট।

তথ্যসূত্র: সিএনএন, বিবিসি

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ