সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুটি। প্রথমত তিনি ক্রিকেটার, বলা ভালো বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। দ্বিতীয়ত, তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব।
কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হারিয়ে যায় সাকিবের সংসদ সদস্য পরিচয়। সাকিব এখন আবার শুধুই একজন ক্রিকেটার। কিন্তু সাকিব নিজেও কি সে রকমই ভাবেন?
খেলোয়াড় হিসেবে সাকিবের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুইটা, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। খেলোয়াড় হিসেবে একটা পরিচয়, আরেকটা হচ্ছে ওনার রাজনৈতিক পরিচয়। আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছিলেন। মানুষের মধ্যে এই দুইটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। এখন খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের একজন খেলোয়াড়কে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব, সেটা অবশ্যই আমরা দেব। তিনি দেশে এলে সেটা আমরা দেব।’ তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের জায়গা থেকে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককেই নিরাপত্তা দিতে বাধ্য এবং সেটা তাঁরা দেবেন।
আদাবর থানায় হওয়া এক হত্যা মামলায় সাকিবকে অভিযুক্ত করা হলেও এ ব্যাপারে সাকিবের প্রতি নমনীয় হওয়ারই ইঙ্গিত দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ, ‘তাঁর নামে যে হত্যা মামলা হয়েছে, সেটার বিষয়ে আমরা বলেছি, আইন মন্ত্রণালয়ই বলেছে, সংশ্লিষ্টতা না থাকলে নামটা বাদ দেওয়া হবে।’
তবে রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে যদি সাকিবের ওপর দেশের মানুষের ক্ষোভ থাকে, সেই ক্ষোভ সাকিবকেই প্রশমন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল আর একজন গানম্যান থাকে। আমার ওপর যদি ১০ কোটি জনগণের ক্ষোভ থাকে, তাহলে এই ৫-৬ জন আমাকে কি নিরাপত্তা দেবে? সে ক্ষেত্রে জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে, সেটাকে তো আমাকেই কমাতে হবে আমার কথা দিয়ে।’
সাকিবের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, খেলার মাঠে অন্তত তাঁকে দর্শকদের হেনস্তার শিকার হতে হবে না। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আরও একবার তিনি দর্শক-সমর্থকদের মন জয় করেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারবেন বলেও আত্মবিশ্বাসী সাকিব। তাঁর দুশ্চিন্তা একটা জায়গাতেই—দেশে ফিরে খেলা শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবেন কি না! তাঁর নামে যেহেতু মামলা আছে, যদি বিমানবন্দরে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়!