কানপুরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্ট ও গোয়ালিয়রে দুই দলের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ঘিরে আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা নামে ভারতের একটি ধর্মীয় সংগঠন। এরপর গত পরশু গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদের বিশেষ রীতি পালন করেছে তারা। এ ছাড়াও গোয়ালিয়রে ম্যাচের দিন বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতি ভারত সরকারও বাংলাদেশ দলের নিরাপত্তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। কানপুরের পুলিশ কমিশনার হরিশ চন্দ্র বাংলাদেশ দলকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
কানপুরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্ট ও গোয়ালিয়রে দুই দলের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ঘিরে আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা নামে ভারতের একটি ধর্মীয় সংগঠন। এরপর গত পরশু গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদের বিশেষ রীতি পালন করেছে তারা। এ ছাড়াও গোয়ালিয়রে ম্যাচের দিন বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতি ভারত সরকারও বাংলাদেশ দলের নিরাপত্তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। কানপুরের পুলিশ কমিশনার হরিশ চন্দ্র বাংলাদেশ দলকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
গ্রিন পার্কে সংবাদকর্মীদের হরিশ চন্দ্র বলেছেন, ‘হোটেল থেকে মাঠ পর্যন্ত দুই দলকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব অ্যান্টি–টেররিজম স্কোয়াডকে (এটিএস) দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক। এই ম্যাচের জন্য কঠিন নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকেও তথ্য নিচ্ছি। কেউ প্রতিবাদের চেষ্টা করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে গতকাল হরিশ চন্দ্র জানিয়েছিলেন, ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে এই টেস্টের জন্য যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিটিআইকে এ নিয়ে হরিশ চন্দ্র বলেছেন, ‘কোনো ফাঁক না রাখতে আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যালোচনা করছি। আশা করি, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স পাওয়া যাবে।’
হরিশ চন্দ্র জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁরা কাজ করছেন। ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স সংস্থা ইন্টেলিজেন্ট ব্যুরো (আইবি) ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তথ্য বিনিময় চলছে। সম্ভাব্য বিপদ এবং সেসব কীভাবে চিহ্নিত করা যায়, এসব নিয়েও তথ্য বিনিময় করছেন তাঁরা।
গোয়ালিয়রে ৬ অক্টোবর প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচের দিন বন্ধের ডাক আগেই দিয়েছে হিন্দু মহাসভা। সংগঠনটির সহসভাপতি জয়বীর ভরদ্বাজ বলেছেন, ‘আমরা এখানে (গোয়ালিয়র) ম্যাচটি হতে দেব না। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বাংলাদেশ দল গোয়ালিয়রে আসার পর আমরা প্রতিবাদ জানাব।’ বন্ধের ডাক দেওয়া নিয়ে ভরদ্বাজ বলেছেন, হিন্দু মহাসভা ম্যাচের দিন গোয়ালিয়র বন্ধের ডাক দিয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এই বন্ধের আওতামুক্ত।
হিন্দু মহাসভার দাবি, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। প্রতিবাদে তারা কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট ও গোয়ালিয়রে টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হতে দিতে চায় না।
গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাতিল না করলে কুপিয়ে পিচ নষ্ট করার হুমকি দিয়েছিলেন ভরদ্বাজ। ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নৃশংসতা চালানো হয়েছে…মন্দির ভাঙা হয়েছে। এ কারণে হিন্দু মহাসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গোয়ালিয়রে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে প্রতিবাদ জানানো হবে।’
গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় আগুন জ্বালানোর পর হিন্দু মহাসভার ২০ সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে কানপুর পুলিশ।
ভারত–বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে হিন্দু মহাসভার হুমকি নিয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমার জয় শাহর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।’
চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশকে ২৮০ রানে হারিয়েছে ভারত। কানপুরে শুক্রবার শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর গোয়ালিয়র, দিল্লি ও হায়দরাবাদে হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টি। বাংলাদেশ দল এখন কানপুরে অবস্থান করছে।