প্রথমবার বিদেশি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ডাক পেয়েছেন। সেটিও আবার পিএসএলে পেশোয়ার জালমির হয়ে। যে দলে বাবর আজম, মোহাম্মদ হারিসদের সঙ্গে খেলার কথা বাংলাদেশ ফাস্ট বোলার নাহিদ রানার। তবে এ টুর্নামেন্টে নাহিদের খেলা নিয়ে এখন তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
কারণ, পিএসএল চলার সময়ই বাংলাদেশে দুটি টেস্ট খেলতে আসবে জিম্বাবুয়ে। আর নাহিদ রানা তো বাংলাদেশ টেস্ট দলের তুরুপের তাস।
জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশে আসবে আগামী ১৫ এপ্রিল। দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটি শুরু হবে ২০ এপ্রিল। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু ২৮ এপ্রিল, পাঁচ দিনে গড়ালে যেটি শেষ হওয়ার কথা ২ মে। অন্যদিকে পিএসএল শুরু ১১ এপ্রিল। নাহিদ রানার দল পেশোয়ার জালমি মাঠে নামবে এক দিন পর, ১২ এপ্রিল।
২০ এপ্রিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে পেশোয়ারের ম্যাচ আছে ৩টি, যার সর্বশেষটি ১৯ এপ্রিল। এই হিসাব করার হয়তো প্রয়োজন নেই। টেস্ট ক্রিকেট তো আর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট নয় যে নাহিদ রানা টানা দুই দিন দুই দেশে ম্যাচ খেলবেন।
রানা ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করতে পারে। বেশ জোরের সঙ্গে। এপ্রিলে এখানে (পাকিস্তান) যখন খেলা হবে, তখন এ ধরনের বোলারের প্রয়োজন হবে।
নাহিদ রানাকে নেওয়ার পর পেশোয়ার জালমির পরিচালক মোহাম্মদ আকরাম
টেস্ট খেলতে শারীরিকভাবে পুরোপুরি ফিট থাকার পাশাপাশি মানসিক প্রস্তুতিটাও রাখতে হয়। তাই ১৯ তারিখ পাকিস্তানে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশে পরের দিন এসে টেস্ট খেলার প্রশ্নই ওঠে না। তবে ১৯ তারিখ এই ম্যাচটির আগে পেশোয়ারের ম্যাচ আছে ১৪ এপ্রিল। সে ক্ষেত্রে এই ম্যাচ খেলার পর টেস্ট দলে যোগ দেওয়ার সময় পাবেন নাহিদ রানা। তবে নাহিদকে নিয়ে কি বিসিবি এই ঝুঁকিটা নেবে? হয়তো না।
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজ চলার সময় পেশোয়ার ম্যাচ খেলবে আরও ৪টি। এই সিরিজের দলে থাকা মানে পেশোয়ারের হয়ে কমপক্ষে ৭টি ম্যাচ মিস করবেন নাহিদ। যা তাঁকে নিয়ে করা পেশোয়ারের পরিকল্পনাকে এলোমেলো করে দিতে পারে।
তা নাহিদ রানাকে নিয়ে একটু বিশেষ পরিকল্পনা করেই দলে নিয়েছিল পেশোয়ার। সেটি অনুমেয়ও, নাহিদ রানার বলের গতিকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল দলটি। ড্রাফটে রানাকে নেওয়ার পর পেশোয়ার জালমির পরিচালক মোহাম্মদ আকরামের কথাতেই যা স্পষ্ট ছিল, ‘রানা ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করতে পারে। বেশ জোরের সঙ্গে। এপ্রিলে এখানে (পাকিস্তান) যখন খেলা হবে, তখন এ ধরনের বোলারের প্রয়োজন হবে। গত দুই আসরে আমাদের পেস আক্রমণে কিছুটা ঘাটতি ছিল। চেষ্টা ছিল সেই ঘাটতি পূরণ করার। এক্সপ্রেস গতি চেয়েছিলাম, সে কারণেই নাহিদ রানাকে নেওয়া।’
দুই টেস্ট খেলার পর ক্লান্ত নাহিদ সেই ঝড়টা কি পাকিস্তানে তুলতে পারবেন? এটি অবশ্য পরের প্রশ্ন। খেলতে পারবেন কি না, আগে তো সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে।
নাহিদ রানা নিজে কী চান? এক দিন আগেই প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ রানা বলেছেন, ‘আমার নজর শুধু জাতীয় দলে। বিসিবি যদি অনুমতি দেয় (লিগে খেলতে), তাহলে যাব। না হলেও কোনো সমস্যা নেই।’
এ কথা বলার সময় নাহিদ রানা হয়তো কল্পনাও করেননি, এত তাড়াতাড়ি তাঁকে জাতীয় দল না ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের তুমুল আলোচিত জটিলতায় পড়তে হবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অগ্রাধিকার পাবে। কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ক্রিকেট অপারেশনস নেবে। নাহিদের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানি না।’