এ যেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের সেই সংজ্ঞার মতো—শেষ হইয়াও হইল না শেষ!
গত রোববার বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার জানিয়েছিলেন, কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ইতি টেনেছেন ১৮ ফুটবলার। এমনকি তাঁরা অনুশীলনে ফিরতেও রাজি। কিন্তু এই দৃশ্যপটের বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে কোচ বাটলার এখনো তাঁর অবস্থানে মোটামুটি অনড় থাকার কথাই জানিয়ে যাচ্ছেন।
রোববার বাফুফেতে সাংবাদিকদের সামনে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খুব বেশি তিক্ততা প্রকাশ না পেলেও গতকাল প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় বুঝিয়ে দিলেন, ‘বিদ্রোহের হোতা’ আট ফুটবলারের ওপর তিনি এখনো কতটা ক্ষুব্ধ। সরাসরিই বলে দিলেন, ‘তারা (৮ বিদ্রোহী ফুটবলার) কোনো দিন আমার অধীনে অনুশীলন করতে পারবে না।’
শুধু শিউলি আজিম, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, মোসাম্মাৎ সাগরিকা, রুপনা চাকমা, তহুরা খাতুন আর শামসুন্নাহার জুনিয়র আমার বিবেচনায় থাকবে। আমি জানি তারা বাকিদের (সাবিনা-সানজিদারা) দ্বারা প্রভাবিত।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার
এমনিতেই ১৮ ফুটবলারের অনুশীলনে ফিরতে চাওয়ার খবরটা সহজভাবে নেননি বাটলার। এই ১৮ জনের মধ্যেও ৮ জনকে নিয়ে তাঁর বেশি আপত্তি। নাম ধরেই বললেন, ‘সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন নিলা, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহার সিনিয়র, কৃষ্ণা রানী সরকার, মাতসুশিমা সুমাইয়া—এই আট ফুটবলার কখনোই আমার অধীনে অনুশীলনে ফিরতে পারবে না। আমি এখন তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে মনোযোগী। তাদের দিকেই পুরোপুরি দৃষ্টি দিতে চাই।’
বিদ্রোহ করা বাকি ১০ ফুটবলারের ব্যাপারে অবশ্য নমনীয় বাটলার। এর মধ্যে সাতজন যে জাতীয় দলের জন্য এখনো তাঁর পছন্দের তালিকায় আছেন, সেটাও বলে দিলেন নাম উল্লেখ করেই, ‘শুধু শিউলি আজিম, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, মোসাম্মাৎ সাগরিকা, রুপনা চাকমা, তহুরা খাতুন আর শামসুন্নাহার জুনিয়র আমার বিবেচনায় থাকবে। আমি জানি তারা বাকিদের (সাবিনা-সানজিদারা) দ্বারা প্রভাবিত।’
বাটলারের আট-সাতে ভাগ করে ফেলা দুই দলের বাইরেও তো আছেন অনুশীলন বর্জন করা আরও তিনজন—স্বর্ণা রানী মন্ডল, সাথী বিশ্বাস ও নাসরিন আক্তার। তাঁদের কেউই অবশ্য সাফজয়ী বাটলারের সর্বশেষ দলে ছিলেন না। হয়তো এ কারণেই তাঁদের নিয়ে কিছু বলেননি বাটলার।
গত ৩০ জানুয়ারি বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ১৮ জন নারী ফুটবলার কোচ পিটার বাটলারের অধীনে না খেলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বাটলারও পাল্টা জানিয়ে দেন, ‘হয় আমি থাকব, নয় ওরা।’ রোববার মাহফুজা আক্তারের কথায় মনে হয়েছিল, সব হয়তো মিটমাট হয়ে গেছে। গতকাল বাটলারের কথায় পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, এ বিতর্ক এখনো শেষ হয়নি।