উদ্যাপনের চেনা দৃশ্য, চেনা মুখ। এক বছরে কত কিছু বদলেছে। বদলায়নি কেবল বিপিএলের ফাইনাল শেষের গল্প। একই জার্সির ক্রিকেটাররা এবারও ‘ভিক্টোরি ল্যাপ’ দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে পরিবার থেকেছে আগের মতোই।
বদলেছে কেবল একটি বিষয়ই, তামিম ইকবাল অধিনায়ক হয়েও ট্রফিটা নেননি, এগিয়ে দিয়েছেন শেষের দিকে একাদশে সুযোগ না পাওয়া নাজমুল হোসেনকে। দৃশ্যটা বুঝিয়ে দিয়েছে, কেন ফরচুন বরিশাল আরও একবার চ্যাম্পিয়ন।
এর আগে হয়েছে ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবালের ‘বিদায়’ অনুষ্ঠান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিদায় বলে দেওয়া তামিমের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ভিডিও। লর্ডস, ভাঙা হাতে নেমে পড়া কিংবা ডাউন দ্য উইকেট—সবই এসেছে ওই ভিডিওতে। স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে সঙ্গে নিয়ে ছলছল চোখে ওই দৃশ্য দেখেছেন তামিম।
দীর্ঘদিনের সতীর্থ মাহমুদউল্লাহ তাঁকে বলেছেন ‘ক্যারিশমাটিক’। বন্ধু মুশফিকুর রহিমের কাছে তামিমই সর্বকালের সেরা। শেষে দুই সন্তান ও স্ত্রী আয়েশাকে নিয়ে মঞ্চে আসা ক্রিকেটের শুরুর গল্প যেমন বলেছেন, স্মরণ করেছেন বাবা ইকবাল খানকেও।
এমন আয়োজন তামিমের জন্য বিষাদ বাড়াতে পারত আরও। শেষ দিকে গতি হারানো চিটাগং কিংসের ইনিংসটা আরেকটু বড় হলে কে জানে ম্যাচের ফল কী হতো। দুর্দান্ত একটা উদ্বোধনী জুটির পর ১৯৪ করে থামে চিটাগং কিংস। তবে রানটা ২০০ ছাড়াতে পারত।
ম্যাচ শেষে তামিমও বললেন প্রতিপক্ষ ২০ রান কম করেছে মাঝপথেই বুঝেছিলেন তাঁরা। চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও মনে করেন, স্কোরকার্ডে আর কিছু রান যোগ হতেই পারত।
ওই কৃতিত্ব যে বরিশালের বোলারদের, জানা কথাটিই বললেন তামিম, ‘শেষ চার ওভার করা বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা আমাদের খেলায় ফিরিয়ে এনেছে।’
বোলাররা বরিশালকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন ইনিংসের শেষ দিকে। অন্যদিকে রান তাড়ায় বরিশালকে দারুণ শুরু এনে দেন অধিনায়ক তামিম। ২৯ বলে করা তাঁর ৫৪ রানের ইনিংসটাকে ভিত বানিয়েই এগিয়ে গেছে বরিশাল। এ নিয়ে তামিম একটু আপ্লুত ছিলেন, ‘আমাদের একটা ভালো শুরু দরকার ছিল। আমি খুবই গর্বিত যে সেটি এনে দিতে পেরেছি।’
টুর্নামেন্টের শুরুতে এত বেশি আলোচনায় না থাকা চিটাগং কিংস ফাইনালে খেলেছে। এখানে লড়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও দল নিয়ে গর্বই করলেন মিঠুন, ‘আমার দল যেভাবে খেলেছে, তা নিয়ে খুবই গর্বিত। টুর্নামেন্টজুড়েই আমরা ভালো খেলেছি। দর্শকদের সমর্থনও ছিল দারুণ।’
ফাইনালের পর সতীর্থদের কাঁধে চড়েছেন শেষ দিকে রান–বলের সমীকরণ মেলানো রিশাদ হোসেন। এরপর লেজারের আলোর খেলায় রঙিন হয়ে উঠেছিল শেরেবাংলা—ডানা ৩৬, জুলাইয়ের শহীদ আবু সাঈদ, বিপিএল ট্রফি; সবই দেখা গেছে ওই আলোর খেলায়। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে গল্পটা থেকেছে একই—ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন।