টেলিভিশন পর্দায় দৃশ্যটা ভেসে উঠতেই সবার চোখ আটকে গেল তাতে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের এক পাশে বসে আছেন আকরাম খান ও অন্যপাশে বিসিবির আরেক পরিচালক নাজমূল আবেদীন।
অন্য সময় হলে এমন দৃশ্য উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। কিন্তু এখন অনেক কিছু। কাল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদেকে নিয়ে রীতিমতো বিষোদ্গারই করেছেন নাজমূল। তাঁর দাবি, ফারুক আহমেদ তাঁকে উদ্দেশ্য করে অসন্তুষ্ট হওয়ার মতো মন্তব্য করেছেন। বর্তমান বোর্ডে চাইলেও কাজ করতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন নাজমূল।
এ ব্যাপারে গতকালই সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন ফারুক। নাজমূলের সঙ্গে সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন। হয়তো তারই ধারাবাহিকতা আজ দুজনের পাশাপাশি বসে খেলা দেখা।
কিন্তু এর ঘণ্টাখানেক আগে পাশের আউটার স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের অনুশীলন শেষে নাজমূল আবেদীনকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন বিসিবি থেকে পদত্যাগ করা সাবেক পরিচালক ও ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ। তিনি এমনও বলেছেন, নাজমূল আবেদীনের মধ্যে ‘লোভ-লালসা’ ছাড়া তিনি কিছু দেখেন না।
যখন তাদের এই মনোভাব দেখি তখন খারাপ লাগে। দুজনই সিনিয়র মানুষ, আমরা যাদেরকে অনেক সম্মান করি। তাদের যখন এমন দেখি, ক্রিকেটার হিসেবে লজ্জিত হই। আসলেই আমরা কী ক্রিকেটাররা এত বেশি লোভী নাকি!
ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ খালেদ মাহমুদ
সাংবাদিকদের মাহমুদ বলেন, ‘দুজনই সাবেক ক্রিকেটার, তাদের কেন ইগোর সমস্যা হবে? তারা তো ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য আসছেন। তারা যখন আসেন, তখন তো অনেক কমিটমেন্ট দেখেছিলাম। বিশেষ করে ফাহিম (নাজমূল আবেদীন) ভাই তো বলছিলেন, উনি অনেক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করছেন, দেখছেন, চিন্তা করছেন। তো সেগুলো আমি এখন দেখতেছি না। এখন দেখতেছি লোভ লালসার মতো হয়ে যাচ্ছে যে, ক্রিকেট অপারেশনস না পেলে আমি কাজ করব না, পদত্যাগ করব। এটা তো লোভ-লালসা!’
মাহমুদের প্রশ্ন—এমন ‘লোভ-লালসা’ কেন আসবে? তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট অপারেশনসই নিতে হবে কেন? আমি যদি অন্য কমিটির চেয়ারম্যান হই, সেখানে সার্ভ করতে পারব না কেন? উনি (নাজমূল) কি ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার? ওনার আগে তো আকরাম ভাই ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার। উনি চাইতে পারেন। কারণ আকরাম ভাই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবং অপারেশনসের চেয়ারম্যান ছিলেন।’
নাজমূল আবেদীন কোথায়, কাকে বলেছেন যে তিনি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব না পেলে পদত্যাগ করবেন; তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি মাহমুদ। বিসিবি সূত্র বরং এটি আগেই জানা গেছে যে, সর্বশেষ বোর্ড সভায় নাজমূল আবেদীনকে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ ও উইমেন্স উইং প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে বোর্ড সিদ্ধান্তটা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।
ফারুক-নাজমূল দুজনের প্রতিই তাঁর সম্মান আছে জানিয়ে মাহমুদ এও বলেছেন, ‘যখন তাদের এই মনোভাব দেখি তখন খারাপ লাগে। দুজনই সিনিয়র মানুষ, আমরা যাদেরকে অনেক সম্মান করি। তাদের যখন এমন দেখি, ক্রিকেটার হিসেবে লজ্জিত হই। আসলেই আমরা কী ক্রিকেটাররা এত বেশি লোভী নাকি!’