দ্যা নিউ ভিশন

এপ্রিল ১৯, ২০২৫ ০৮:৪৮

১০ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

৪ ছক্কা ২ চারে ৬২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও দলের জয়ে কাজে লাগেনি

ব্রান্ডন কিং আর এভিন লুইস আক্ষেপ করতেই পারেন।

একজন পাননি সেঞ্চুরি। আরেকজন ফিফটি। অথচ সুযোগ ছিল যথেষ্টই। তিন অঙ্কের সম্ভাবনা জাগিয়ে কিং ফিরেছেন ৮২ রানে, আর ফিফটির খুব কাছে গিয়েও লুইস ফিরেছেন ৪৯-এ।

আজ সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাপ্তির খাতায় যদি কোনো অপূর্ণতা থেকে থাকে, সেটা কিংয়ের সেঞ্চুরি আর লুইসের ফিফটি না পাওয়াটাই। বাকিটা শুধুই অর্জনের।

বাংলাদেশের দেওয়া ২২৮ রানের লক্ষ্য ৩৬.৫ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭ উইকেট ব্যবধানে শাহ হোপের দল শুধু ম্যাচই জেতেনি, দশ বছর পর জিতেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও।

রান তাড়ায় নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের ভিত্তিটা পেয়েছে কিং-লুইসের উদ্বোধনী জুটিতেই। লক্ষ্য ছিল ২২৮, দুজনের প্রথম উইকেট জুটিই তুলে ফেলে প্রায় অর্ধেক রান। একুশতম ওভারের প্রথম বলে লুইস যখন ৪৯ রান করে রিশাদের বলে তাঁরই হাতে ক্যাচ দেন, ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে ১০৯ রান।

বাংলাদেশ জুটিটা ভাঙতে পারত আগেই, যদি ২৮ রানে থাকা লুইসের সহজ ক্যাচ সৌম্য সরকার নিতে পারতেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরের ব্যাটসম্যানরাও যেভাবে খেলেছেন, তাতে ক্যাচ মিসের ক্ষতি অনুভূতই হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের।

লুইস ফেরার পর কিসি কার্টিকে নিয়ে আরেকটি বড় জুটি গড়েন কিং। দ্রুত রান তুলে সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যান। তবে নাহিদ রানার দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হলে ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানকে ৮২ রান নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। কার্টির সঙ্গে জুটিতে ৪৮ বলে ৬৬ রান যোগ করে যান কিং। কার্টিও অবশ্য এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, বাংলাদেশের ছয় নম্বর বোলার হিসেবে আসা আফিফ হোসেনের বলে ফেরেন ৪৫ রান করে। তবে জয়ের জন্য দরকারি রান ততক্ষণে ৩০-এর নিচে নেমে আসায় শাপ হোপ-শারফেন রাদারফোর্ড লক্ষ্যপূরণ করেছেন সহজেই।

বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে গেছে মূলত ব্যাটিংয়েই। প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রানের পুঁজি নিয়েও ৫ উইকেটে হারতে হয়েছিল। এবার সেটা আড়াই শতেও পৌঁছানো যায়নি। পরিস্থিতি তো এমনও ছিল যে, দেড় শও হয়তো হবে না।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ পাওয়ার প্লের মধ্যেই হারিয়ে ফেলে তিন ব্যাটসম্যানকে। ওপেনার তানজিদ তামিম একপ্রান্তে ছিলেন আক্রমণাত্মক ভূমিকায়, অন্য প্রান্তে রীতিমতো উইকেট বিলিয়েছেন সৌম্য সরকার, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

এর মধ্যে সৌম্য ফেরেন গা-ছাড়া ভাবে ইন-সাইড আউট করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে (৫ বলে ২), রান নিতে হিমশিম খাওয়া লিটন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে পুল খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে (১৯ বলে ৪) আর মিরাজ বল ছাড়বেন কি খেলবেন দ্বিধায় শেষ মুহূর্তে ছাড়তে গিয়ে ব্যাট দিয়ে বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়ে (৫ বলে ১)। সবাই উইকেট দিয়েছেন জেইডেন সিলসের বলে।

ভালো খেলতে থাকা তানজিদও উইকেটের মিছিলে যোগ দেন ১১তম ওভারেই, বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায় ৬৪ রানে। এক পর্যায়ে আফিফ, জাকের, রিশাদদের বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর পরিণত হয় ৭ উইকেটে ১১৫ রানে।

এই জায়গা থেকে রান দুই শর ওপারে গেছে অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম সাকিবের ৯২ রানের জুটির সৌজন্যে। ৪৪তম ওভারে তানজিম তাঁর ক্যারিয়ারসেরা ৪৫ রান করে আউট হওয়ার পরের ওভারেই মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ৬২ করে।

এ দুজন বড় জুটি গড়লেও টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানেই, যা শেষ পযন্ত বড় হারই এনে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এক দশক পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হারও।

দশ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের তথ্যই বলে দিচ্ছে, মাঝের সময়টায় বাংলাদেশ কতটা দাপট দেখিয়েছে। ২০১৪ সালের পর দুবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে গেছে বাংলাদেশ, আবার ক্যারিবীয়রাও বাংলাদেশে এসেছে দুবার। এই চার সফরেই ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার সেটা থমকে গেছে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই।

সিরিজের শেষ ওয়ানডে ১২ ডিসেম্বর একই মাঠে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ (মাহমুদউল্লাহ ৬২, তানজিদ ৪৬, তানজিম ৪৫, আফিফ ২৬, শরীফুল ১৫; সিলস ৪/২২, মোতি ২/৩৬, চেজ ১/১৮)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৬.৫ ওভারে ২৩০/৩ (কিং ৮২, লুইস ৪৯, কার্টি ৪৫, রাদারফোর্ড ২৪*; আফিফ ১/১২, রানা ১/৩৮)। ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জেইডেন সিলস। সিরিজ: ৩ ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আশা

ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ যাঁরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন, তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী