ভেনেজুয়েলার পর উরুগুয়ের সঙ্গেও ড্র করল ব্রাজিল। সালভাদরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে উরুগুয়ের সঙ্গে পিছিয়ে পড়েও ১-১ গোলে ড্র করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ৫৫ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ফেদেরিকো ভালভের্দের দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ৭ মিনিটে পেনাল্টি বক্সের মাথা থেকে গেরসনের দুর্দান্ত এক শট খুঁজে নেয় উরুগুয়ের জাল।
ঘরের মাঠেও পয়েন্ট হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্বের পয়েন্ট তালিকার পাঁচে নেমে গেল ব্রাজিল। ১২ ম্যাচে তৃতীয়বার ড্র করা ব্রাজিলের পয়েন্ট ১৮। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উরুগুয়ে। আজ পেরুকে ১-০ গোলে হারানো বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ২৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে।
উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিল যে একদমই বাজে খেলেছে, তা নয়। ম্যাচের ৬১.৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছে, ১৮টি শট নিয়েছে। কিন্তু খুব ভালো খেলেছে, সেটাও বলা যাচ্ছে না। কারণ, ওই ১৮ শটের মধ্যে পোস্টে রাখতে পেরেছে মাত্র ৩টি শট। উরুগুয়ে ৮টি শট নিয়ে পোস্টে রাখতে পেরেছে ২টি শট।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন ব্রাজিল তারকা ভিনিসিয়ুস। ৩ মিনিটে ডান প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে তাঁর ডান পায়ের শট উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রোচেটের ডান দিকের পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়। ২১ মিনিটে দারউইন নুনিয়েজের পাস পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শট ব্রাজিলের পোস্টে রাখতে পারেননি ফেকুন্দো পেলিস্ত্রি। ১ মিনিট পর উরুগুয়ে লেফটব্যাক মাথিয়াস অলিভেরার হেডও পোস্টের বাঁ দিক দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৮ ও ৩৫ মিনিটে ব্রাজিল তারকা রাফিনিয়াও উরুগুয়ের পোস্টকে চোখ রাঙিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন। তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোলের সবচেয়ে ভালো সুযোগ পায় ব্রাজিল। রাফিনিয়ার ক্রস পেয়ে খুব কাছ থেকে হেড করেছিলেন ব্রাজিল স্ট্রাইকার ইগর জেসুস। দারুণ দক্ষতায় তা রুখে দেন গোলকিপার রোচেটে।
তবে ভালভের্দে না গেরসনের গোলটি সেরা—তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। ভালভের্দের গোলের ৭ মিনিট পর ডান প্রান্ত থেকে উড়ে আসা ক্রস বক্সে হেড করে ক্লিয়ার করেছিলেন উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু বক্সের ঠিক মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা গেরসনের পায়ের ওপর এসে পড়ে বলটি। বাঁ পায়ের বুলেট শটের ভলিতে বল জালে পাঠান ফ্ল্যামেঙ্গো ডিফেন্ডার। ব্রাজিলের জার্সিতে তাঁর প্রথম গোলটিই হয়ে রইল স্মরণীয়।
ম্যাচের শেষ দিকে ব্রাজিলের গোলের দুটি সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া ও বদলি নামা লুইস হেনরিক। ফন্তে নোভে অ্যারেনায় শেষ দিকে স্বাগতিক দর্শকের দুয়োও শুনতে হয় দরিভালের দলকে। ম্যাচ শেষে রাফিনিয়া এ নিয়ে বলেছেন, ‘দুয়োটা সম্ভবত ম্যাচের ফলের জন্য। কারণ, আমরা মাঠে নিজেদের সর্বস্ব দিয়েছি।’ তবে রাফিনিয়া যা–ই বলুন, বছরের শেষ ম্যাচটা নিজেদের সমর্থকদের দুয়ো শুনে শেষ করতে চাইবে না কোনো দলই।
বারানকিয়ায় অন্য ম্যাচে কলম্বিয়াকে ১–০ গোলে হারিয়ে টেবিলের তিনে উঠে এসেছে ইকুয়েডর। ১২ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ১৯ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট পেলেও গোল ব্যবধানে ইকুয়েডরের সঙ্গে পিছিয়ে চারে কলম্বিয়া। ইকুয়েডর–কলম্বিয়া ম্যাচটি ব্রাজিল–উরুগুয়ে ম্যাচের আগে শেষ হয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ ৬ দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। সপ্তম দলটিকে দিতে হবে প্লে অফ পরীক্ষা।