নাজমুল হোসেন নেতৃত্ব ছাড়তে চান—খবরটা ছড়িয়ে পড়ে দুপুর নাগাদ। স্বাভাবিকভাবেই এ ব্যাপারে বিসিবির বক্তব্যের জন্য দুপুর থেকেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হচ্ছিলেন না কেউই। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও দেশের বাইরে। তাঁর দেশে ফেরার কথা ২৮ অক্টোবর। এই বোর্ডে ফারুক আহমেদের পর সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিচালক নাজমূল আবেদীন। বিকেলের দিকে এবারের মেঘনা ব্যাংক তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের ট্রফি উন্মোচনে পাওয়া গেল তাঁকে।
স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহলী সাংবাদিকেরা নাজমুলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। উত্তরে নাজমূল আবেদীন বলেছেন, ‘আমি সকাল থেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলাম। অনেকের ফোন এ কারণে ধরতে পারিনি। মিটিংয়ে ছিলাম, কথাবার্তার মধ্যে ছিলাম। আমিও টিভির স্ক্রলে দেখেছি, আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি, সে নাকি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে কোথাও। যদি হয়ে থাকে, আনুষ্ঠানিক কোনো কাগজ আমার কাছে আসেনি।’
নাজমূল আবেদীন পরে যোগ করেন, ‘যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটা আমাদের জন্য একটা বড় খবর। এখন যদি নতুন অধিনায়ক তৈরি করতে হয়, বড় পদক্ষেপ নিতে হবে। অথবা তাকেই আবার অনুরোধ করে রাখা হয় কি না, এটা আমাদের বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, ঘটনাটা জানা গেছে…আমাদের বিচার–বিবেচনা করতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ক্রিকেট বোর্ড সিদ্ধান্তটা অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেই নেবে বলে জানান নাজমূল আবেদীন, ‘বিসিবি আলোচনা করতে চাইবে। কারণ, (নাজমুল হোসেন) শান্ত এত দিন ধরে অধিনায়কত্ব করে আসছে, তাই এটা তো আমাদের সময়ের ইনভেস্টমেন্টও। আমরা একজনকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। সে যদি হঠাৎ করে সরে যায়, নতুন একজন কিছুটা অপ্রস্তুত। সেটাতে আমাদের যেতে না চাওয়াটা স্বাভাবিক হবে। তারপরও এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। হঠাৎ করে ৩-৪টা উইকেট পড়ে গেলে তো খেলা শেষ হয়ে যায় না।’
নাজমুলের জায়গায় অন্য কেউ নেতৃত্বে এলে তাঁকেও যেন একই পরিণতি সামলাতে না হয়, সে ব্যাপারে নিজেদের সচেতন থাকার কথাও বলেছেন নাজমূল আবেদীন। ‘শান্ত যদি না থাকে, তাহলে কারও না কারও কাছে আমাদের যেতে হবে। তাকেও কিন্তু একই জিনিস মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের উচিত হবে, যে–ই অধিনায়ক হোক না কেন, পাশে থাকা। হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ, মাধুগালে, ইমরান খান বা ধোনি হওয়া যায় না, সময় দিতে হবে। আমাদের কালচারের মধ্যে ওভাবে অধিনায়কও গড়ে ওঠে না। তাই অধিনায়কের ওপর চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।’
এটা মনে রাখা যে ও বাংলাদেশ দলের মতো একটা দলের অধিনায়ক এবং এ দল খুব অধারাবাহিক। ও নিজেও খুবই তরুণ একজন খেলোয়াড়। ওর ব্যাপারে আরেকটু সহনাভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নাজমুলের দায়িত্ব ছাড়ার খবর নিশ্চিত না করলেও অধিনায়ক হিসেবে যে তিনি চাপে ছিলেন, তা লুকাননি বিসিবির এই পরিচালক। তাঁর কথা, ‘আমরা সবাই জানি ও দুর্দান্ত একজন ব্যাটার। তার মধ্যে একজন খেলোয়াড় আমাদেরই কারণে নেতৃত্ব দিতে পারছে না। কারণ, আমাদের মতো একটা দেশের ক্যাপ্টেন হওয়া মানে সব সময় চাপে থাকা; ভালো পারফরম্যান্স হবে না। তাকে নিয়ে আমরা যে পরিমাণ সমালোচনা করি বা যেভাবে সমালোচনা করি, সেটা কিন্তু তার জন্য কঠিন হয়ে যায়।’
নাজমুলের ব্যাট হাতে অধারাবাহিকতার কারণও নাকি এটাই, ‘তার ভালো না খেলার কারণও হয়তো সেটা। আমার মনে হয় খুব প্রয়োজন ছিল ওর পাশে থাকা, ওকে সাপোর্ট করা। এটা মনে রাখা যে ও বাংলাদেশ দলের মতো একটা দলের অধিনায়ক এবং এ দল খুব অধারাবাহিক। ও নিজেও খুবই তরুণ একজন খেলোয়াড়। ওর ব্যাপারে আরেকটু সহনাভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল।’
নাজমুলের জায়গায় অন্য কেউ নেতৃত্বে এলে তাঁকেও যেন একই পরিণতি সামলাতে না হয়, সে ব্যাপারে নিজেদের সচেতন থাকার কথাও বলেছেন নাজমূল আবেদীন। ‘শান্ত যদি না থাকে, তাহলে কারও না কারও কাছে আমাদের যেতে হবে। তাকেও কিন্তু একই জিনিস মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের উচিত হবে, যে–ই অধিনায়ক হোক না কেন, পাশে থাকা। হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ, মাধুগালে, ইমরান খান বা ধোনি হওয়া যায় না, সময় দিতে হবে। আমাদের কালচারের মধ্যে ওভাবে অধিনায়কও গড়ে ওঠে না। তাই অধিনায়কের ওপর চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।’