হাজারো ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেও শেখ হাসিনার কোনো অনুশোচনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, পলাতক অবস্থা থেকেও এখনো তিনি হিংস্র মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করছেন। আর রাষ্ট্রপতি সেই পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি ছাত্র-জনতার উত্তাল সময়ে কিছু বলেননি। এখন শেখ হাসিনার অনুগামী হয়ে কথা বলছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ ইয়ামিন ও নাফিসার পরিবারকে সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে আজ সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের রুহুল কবির রিজভী এ কথাগুলো বলেন।
রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি তো শেখ হাসিনারই দেওয়া। রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন, যুবলীগ করতেন। উনি (রাষ্ট্রপতি) বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। পলাতক শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়ে যাননি, হতে পারে এটা? আমরা জানি, তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর দায়িত্ব পালনের চেয়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালনে বেশি ইচ্ছুক। প্রথম দিকে ছাত্র-জনতার যে উত্তাল রূপ, সে সময় তিনি কিছু বলেননি। এখন শেখ হাসিনার অনুগামী হয়ে কথা বলছেন। কোনো ধরনের চক্রান্তের সঙ্গে তিনি আছেন কি না দেখতে হবে।’
রিজভী আরও বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা নানা জায়গায় আছে। ওদের হাতে আছে প্রচুর টাকা। সব টাকা পাচার করতে পেরেছে, তা নয়। কালোটাকা ও লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র প্রয়োগ করবে জনগণের ওপর। দেখাতে চাইবে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল। দেশকে বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় থাকার যে রাজনীতি, শেখ হাসিনা আবারও তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চান। সেটা জনগণ হতে দেবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, রাষ্ট্র চালাতে বর্তমান সরকারের যে সংস্কার দরকার, তা দ্রুত শেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচিত সরকার পুরো রাষ্ট্র সংস্কার করবে। আওয়ামী লীগ সরকার যে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। অপরাধীরা সব পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দোসররা দেশে আবারও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অবৈধ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হচ্ছে না। দেশে দ্রব্যমূল্য এখনো মানুষের নাগালের বাইরে।
গণ-আন্দোলনে সাভার ও আশুলিয়ায় সাতজন শহীদ এবং আহত তিনজনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধিদল। প্রথমে সাভারে ব্যাংক টাউনে শহীদ ইয়ামিন, শহীদ নাফিসা হোসেন ও আহত ইসমে আজমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা। পরে আশুলিয়ার কালার টেকের কাইচা বাড়িতে শহীদ মামুন বিপ্লব, শহীদ আবদুস সাবুর, শহীদ সাজ্জাদ, শহীদ বাইজিদ এবং আহত হান্নান ও আকাশ মিয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধিদল।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ঢাকা জেলা সভাপতি খোন্দকার আবু আশফাক, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন, সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন প্রমুখ।