দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি বস্ত্রকলে ৩৫ থেকে ৪০ জন তরুণ হানা দেন। তাঁরা নিজেদের একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দিয়ে কারখানার কর্মচারীদের বলেন, এখন থেকে অন্য কারও কাছে কারখানার ঝুট বা ফেলনা উপকরণ বিক্রি করা যাবে না। বিক্রি করতে হলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যোগাযোগের জন্য ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ছয়জন নেতার নাম ও মুঠোফোন নম্বর লেখা একটি কাগজ দিয়ে আসেন তাঁরা।
সেই কাগজের থাকা প্রথম নামটি রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি মো. খোকন মিয়া। জানতে চাইলে তিনি গত সোমবার প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন, তাঁদের কর্মীরা বিভিন্ন কারখানায় গিয়েছিলেন। খোকন দাবি করেন, ‘আমরা কোনো চাঁদাবাজি চাই না। অতীতে যেভাবে কারখানার ঝুট বিক্রি হয়েছে, আমরা সেভাবেই সমঝোতার মাধ্যমে কাজটি করতে চাই।’
মিলে সুতা উৎপাদনের পর ঝুট হিসেবে তুলা বের হয়। বিদায়ী সরকারের আমলে কারখানা থেকে তুলা বের করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের গাড়িপ্রতি ১০ হাজার টাকা দিতে হতো বলে জানালেন রূপগঞ্জের এক বস্ত্রকল–মালিক। তিনি জানান, সুতা উৎপাদনে ব্যবহৃত তুলার ৭ থেকে ৮ শতাংশই ওয়েস্টেজ হয়। তার মধ্যে ৪ শতাংশ ঝুট হিসেবে বিক্রি করতে হয়।
৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের সরবরাহ ব্যবসার হাতবদল শুরু হয়। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা তৈরি পোশাক কারখানা ও বস্ত্রকলের ঝুট ব্যবসা, শ্রমিকদের নাশতা সরবরাহের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পকারখানার ফেলনা উপকরণ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এই সুযোগে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেসব ব্যবসার দখল নিতে মাঠে নামেন।
কয়েকজন শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। কোথাও কোথাও নিজেদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় তাঁরা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি। বিএনপির নেতাদের নামে কিছু ব্যবসায়ীর কাছে মোটা অঙ্কের নগদ টাকা চাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আবার গা ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ নামে-বেনামে ফোন করে ঝুটের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হুমকি দিচ্ছেন। তাই রাজনীতির পটপরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি শিল্পকারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি বস্ত্রকলে ৩৫ থেকে ৪০ জন তরুণ হানা দেন। তাঁরা নিজেদের একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দিয়ে কারখানার কর্মচারীদের বলেন, এখন থেকে অন্য কারও কাছে কারখানার ঝুট বা ফেলনা উপকরণ বিক্রি করা যাবে না। বিক্রি করতে হলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যোগাযোগের জন্য ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ছয়জন নেতার নাম ও মুঠোফোন নম্বর লেখা একটি কাগজ দিয়ে আসেন তাঁরা।
সেই কাগজের থাকা প্রথম নামটি রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি মো. খোকন মিয়া। জানতে চাইলে তিনি গত সোমবার প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন, তাঁদের কর্মীরা বিভিন্ন কারখানায় গিয়েছিলেন। খোকন দাবি করেন, ‘আমরা কোনো চাঁদাবাজি চাই না। অতীতে যেভাবে কারখানার ঝুট বিক্রি হয়েছে, আমরা সেভাবেই সমঝোতার মাধ্যমে কাজটি করতে চাই।’
মিলে সুতা উৎপাদনের পর ঝুট হিসেবে তুলা বের হয়। বিদায়ী সরকারের আমলে কারখানা থেকে তুলা বের করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের গাড়িপ্রতি ১০ হাজার টাকা দিতে হতো বলে জানালেন রূপগঞ্জের এক বস্ত্রকল–মালিক। তিনি জানান, সুতা উৎপাদনে ব্যবহৃত তুলার ৭ থেকে ৮ শতাংশই ওয়েস্টেজ হয়। তার মধ্যে ৪ শতাংশ ঝুট হিসেবে বিক্রি করতে হয়।
৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের সরবরাহ ব্যবসার হাতবদল শুরু হয়। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা তৈরি পোশাক কারখানা ও বস্ত্রকলের ঝুট ব্যবসা, শ্রমিকদের নাশতা সরবরাহের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পকারখানার ফেলনা উপকরণ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এই সুযোগে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেসব ব্যবসার দখল নিতে মাঠে নামেন।
কয়েকজন শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। কোথাও কোথাও নিজেদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় তাঁরা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি। বিএনপির নেতাদের নামে কিছু ব্যবসায়ীর কাছে মোটা অঙ্কের নগদ টাকা চাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আবার গা ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ নামে-বেনামে ফোন করে ঝুটের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হুমকি দিচ্ছেন। তাই রাজনীতির পটপরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি শিল্পকারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গাজীপুর সদর উপজেলা, টঙ্গী, কোনাবাড়ী, কাশিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কিছু এলাকায় কারখানার ঝুট ব্যবসা কারা নিয়ন্ত্রণ করবে, সে বিষয়ে সমঝোতা হয়নি। এ জন্য কোথাও কোথাও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
কোনাবাড়ী এলাকার একটি কারখানার মহাব্যবস্থাপক স্বপন মাহমুদ জানান, এক মাস ধরে কারখানার পরিত্যক্ত মালামাল বিক্রি করতে পারছি না। এতে অনেক মালপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিন আগে নিজেরা এসব মালামাল বিক্রির উদ্যোগ নিলে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী বাধা দেন।
কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা এলাকার একটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফখরুল ইসলাম বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ঝুট কারখানা থেকে বের করা যায়নি। গুদামে এসব ঝুট পড়ে আছে। প্রতি মাসে কারখানায় যে পরিমাণ ঝুট তৈরি হয়, তা সরাসরি বিক্রি করলে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পাওয়া যেত। কিন্তু প্রভাবশালী নেতাদের কাছে তা মাত্র ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে হয়।
গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনায় ইউটা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিমের সমর্থক শতাধিক কর্মী মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ওই কারখানার সামনে যান। অন্যদিকে কারখানাটির বর্তমান ঝুট ব্যবসায়ী শহীদ–সমর্থিত আরেকটি পক্ষ সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে শহীদের লোকজন মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় প্রায় ১৫টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেন এম মঞ্জুরুল করিমের সমর্থকেরা।
গাজীপুরের একটি কারখানার খালি ব্যাগ, ড্রামসহ বিভিন্ন ধরনের পরিত্যক্ত উপকরণের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে গত দুই সপ্তাহে বিএনপিপন্থী কয়েকটি পক্ষ ধরনা দিয়েছে। একই সঙ্গে এত দিন আওয়ামী লীগের যাঁরা এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন তাঁরাও যোগাযোগ করছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষকেই ব্যবসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।