দেশে গুজব ছড়িয়ে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে বলে মনে করবেন না যে সব স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদের দোসররা পালিয়ে গেছে। না, তারা আছে। নানা রকম গুজব ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, নানা রকম বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। আপনাদের হুঁশিয়ার থাকতে হবে, কোনো রকমের গুজব, কোনো রকমের বিভ্রান্তিতে যেন আমরা পা না দিই।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ওদের (পতিত আওয়ামী লীগ) পক্ষে দেশে-বিদেশে শক্তি আছে, ওদের অনেক টাকাপয়সা আছে, তারা নানাভাবে চেষ্টা করতে পারে আমাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এমনও আছে, যাদের আমরা হয়তো চিনতে ভুল করছি…মনে হচ্ছে আমাদের পক্ষে। ওই লোকগুলো আমাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করার মতো স্লোগান দেয়, কথা বলে—যাতে করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, সে শক্তির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। আরেকটা উদ্দেশ্য আছে তাদের। তারা জানে যে এ দেশের জনগণের মন-মানসে বিএনপির অস্তিত্ব এতই গ্রথিত হয়ে আছে যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের সম্ভাবনা খুব কম। অতএব বিএনপিকে কীভাবে হেয় করা যায়, এ রকম ষড়যন্ত্রে কেউ কেউ লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।’
কোনো দল বা জোটের নাম উল্লেখ না করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, আমরা পরস্পর শত্রু নই। আসুন আমরা পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী হই। আপনি আপনার কথা বলেন, আমি আমার কথা বলি। আপনার অতীতও জনগণ জানে, আমার অতীতও জনগণ জানে…আগামী দিনে যখন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে জনগণ নির্ধারিত করবে কাকে তারা তাদের কল্যাণের জন্য দায়িত্ব দেবে আগামী দিনের সরকার পরিচালনার। কিন্তু সেটা না করে মিথ্যা কথা বলা, অন্যায়ভাবে সমালোচনা করা আল্লাহ পছন্দ করেন না।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দুর্গোৎসব চলছে। যাতে করে সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদেরও আছে। কারণ, কিছু মানুষ আছে, যারা চক্রান্ত করে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আমাদের দেশের বদনাম করার চেষ্টা করবে।’ তিনি বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা সমস্যা হচ্ছে। বহু পুলিশ এখনো যোগ দেয়নি। অনেক জায়গা কাজকর্ম ঠিকমতো শুরু হয়নি। সেই সব জায়গায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে।
শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ’৯০–এর জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নব্বইয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান রিপন, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান প্রমুখ।
এর আগে সকালে রাজধানীর রাজউক অ্যাভিনিউর জেহাদ স্কয়ারে স্মৃতিস্তম্ভে বিএনপির পক্ষ থেকে আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলমসহ নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।