দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০১:২৩

ঢাবিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের

বাঁ থেকে জালাল, সাজ্জাদ, আহসান উল্লাহ, সুমন ও ওয়াজিবুল | ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে মোবাইল চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ছয় শিক্ষার্থীকে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। আটক এই ছয় জনের মধ্যে তিনজনই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও দুইজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া (২০১৮-১৯ সেশন); ভূগোল বিভাগের আল হুসাইন সাজ্জাদ (২০২০-২১ সেশন), গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ (২০১৮-১৯ সেশন), মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া (২০২১-২২ সেশন); সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম (২০২১-২২ সেশন) এবং মৃত্তিকা, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। তারা শুক্রবার আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আটকদের মধ্যে জালাল মিয়া ফজলুল হল শাখা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের রাজনীতি করতেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে বেশ সক্রিয় হন।

আল হোসাইন সাজ্জাদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক। জানা গেছে, সাজ্জাদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন।

আহসান উল্লাহ্ ছিলেন ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন উপসম্পাদক। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা কালবেলাকে বলেন, সুমন মিয়া ও ওয়াজিবুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের একান্ত অনুগত ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে হলে কাজ করেছেন। ৫ আগস্টের আগে তারা উভয়েই ব্যাচমেট ও জুনিয়রদের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতেন বলে শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বুধবার এক যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে আসে। সে মোবাইল চুরি করেছে বলে তাকে এলোপাথারী চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম- তোফাজ্জল বলে জানায়। পরে সে মানসিক রোগি বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাইয়ে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সাথে পিছনে হাত বেধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। তার এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেলে নিয়ে যায়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুধবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট