দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২২:০৪

কমলার রানিং মেট ওয়ালজকে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রক্ষা করার দাবি ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টিম ওয়ালজ | সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে মিনেসোটায় ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন চলাকালে টিম ওয়ালজকে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রক্ষা করার দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

মিনেসোটার গভর্নর ওয়ালজ আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট–দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিসের রানিং মেট। নির্বাচনে কমলার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্প বিক্ষোভ চলাকালে পরিস্থিতি শান্ত করতে কোনো কিছুই করেননি; বরং ২৯ মে তাঁর টুইটার (এক্স) অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘এই উচ্ছৃঙ্খল লোকজন জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতিকে অসম্মান করছে এবং আমি তা হতে দেব না।’
ফক্স নিউজকে গতকাল বুধবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, বিক্ষোভকারীরা ওয়ালজের বাড়ি ঘেরাও করে ফেলেছিলেন। সেই সময় বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করতে তিনি সবার সামনে এসে ওয়ালজকে ‘একজন ভালো মানুষ’ বলে ঘোষণা করেছিলেন।

তবে ট্রাম্প তাঁর এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে বা সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান কিংবা দিনক্ষণ উল্লেখ করতে পারেননি।

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের আগেই অবশ্য ২০২০ সালের ওই বিক্ষোভ নিয়ে ওয়ালজ কথা বলেছেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘প্রথমত, ট্রাম্পের টুইটের কারণেই সশস্ত্র লোকজন আমার বাড়ির দিকে গিয়েছিল। তাদের ভিড়ের মধ্যে উগ্র ডানপন্থী সংগঠন ‘প্রাউড বয়েজ’–এর সদস্যরাও ছিলেন।’
গতকালের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘দাঙ্গার সময় আমি তাঁকে (ওয়ালজ) অনেক সাহায্য করেছিলাম। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উড়িয়ে লোকজন তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেছিল।’

২০২০ সালের ২৫ মে মিনোসোটার মিনিয়াপলিসে ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তার করার সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিন (বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত) অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করলে ঘটনাস্থলেই দম বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। ফ্লয়েড একজন কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।

ট্রাম্প সে সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে কোনো কিছুই করেননি; বরং ২৯ মে তাঁর টুইটার (এক্স) অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘এই উচ্ছৃঙ্খল লোকজন জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতিকে অসম্মান করছে এবং আমি তা হতে দেব না। শুধু গভর্নর টিম ওয়ালজের সঙ্গে কথা বলুন এবং বলুন, সামরিক বাহিনী সবভাবে তাঁর সঙ্গে আছে। যেকোনো সংকটে আমরা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করব, কিন্তু তা তখনই করব, যখন লুট শুরু হবে, গোলাগুলি শুরু হবে।’
ওই সময় টুইটার কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ট্রাম্পের এ পোস্ট সহিংসতাকে জোরালো করছে, যা তাদের নীতির লঙ্ঘন। তবে তারা পোস্টটি অনলাইনে রেখে দিয়েছিল।

কামালা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প | সংগৃহীত

ফক্সকে ট্রাম্প বলেন, ‘ওয়ালজ খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তাঁর কেবল একজন প্রহরী ছিল। আমার অনুমান, সেটি তাঁর সরকারি বা অন্য কোনো বাড়ি ছিল। তিনি আমাকে ফোন করেন। আমি বলেছিলাম, এখন আপনি আমাকে কী করতে বলেন? আমি হোয়াইট হাউসে ছিলাম। তিনি বলেছিলেন, “আপনি লোকজনকে বলুন, আমি ভালো মানুষ।” আমি সেটা করলাম এবং সবাই আমেরিকার পতাকা তুলে নেয়, নিজেদের বড় পতাকা নিয়ে চলে যায়।’

‘সেখানে হাজারো মানুষ ছিলেন। তিনি (ওয়ালজ) আমাকে পুনরায় ফোন করেন এবং আমাকে ধন্যবাদ জানান। এটাই তাঁর সঙ্গে করা আমার একমাত্র কাজ’, বলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প এ দাবি করলেও ওয়ালজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র গতকাল গার্ডিয়ানকে বলেন, ট্রাম্প যে ফোনের কথা বলছেন, সেটা ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের এক মাস আগের ঘটনা। ট্রাম্পের ‘লিবারেট মিশিগান’ টুইটের কয়েক দিন পরের ঘটনা।

ওই সূত্র আরও বলে, করোনা মহামারির সময় ওয়ালজ ও ট্রাম্পের সৌহার্দ্যপূর্ণ কথোপকথন হয়েছিল। তিনি প্রমাণ হিসেবে ওই সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর ও ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল ট্রাম্পের একটি টুইটের কথা উল্লেখ করেন।

পলিটিকোর দুই সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ালজ নিজেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাঁর ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ