কোনো আসামি ও সাক্ষীর নাম ছাড়াই পিটুনিতে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ (৩২) হত্যার ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে তাঁর বড় ভাই মো. বেহেস্তী (৩৫) বাদী হয়ে রাজশাহী নগরের মতিহার থানায় এই মামলা করেন। মামলার তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বাদী মো. বেহেস্তী বলেছেন, তাঁর ছোট ভাই আবদুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল সেন্টারের স্টোরকিপার পদে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ওই পদে যোগদানের পর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবিলী অফিসার্স কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আবদুল্লাহ আল মাসুদ কোয়ার্টার থেকে তাঁর ব্যবহৃত স্কুটি নিয়ে নবজাতক সন্তান ও অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারের ফার্মেসিতে যান। এ সময় অজ্ঞাতনামা লোকজন তাঁকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অনুসরণ করে। সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে বিনোদপুর বাজার থেকে অজ্ঞাতনামা লোকজন কৌশলে মাসুদকে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁর ভাইকে মতিহার থানা এলাকার অজ্ঞাত স্থানে উপর্যুপরি মারধর করে। তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় রেখে জনৈক এক ব্যক্তি মতিহার থানায় খোঁজ নিতে আসে ওই থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে কোনো হত্যা মামলা হয়েছে কি না। মতিহার থানায় কোনো হত্যা মামলা না থাকায় ওই ব্যক্তির নির্দেশনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা ও উত্তেজিত ছাত্র-জনতা নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় মাসুদকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যান। থানার ফ্লোরে তাঁর ভাইকে শুইয়ে দিয়ে জনৈক ছাত্র সমন্বয়কের নেতৃত্বে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ঘিরে ফেলেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স তাঁর ছোট ভাই আবদুল্লাহ আল মাসুদকে বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদ রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
এজাহারে মো. বেহেস্তী অভিযোগ করেছেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছোট ভাইকে বেধড়ক মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এজাহারের শেষাংশে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা ২০১৪ সালে তাঁর ভাইকে মারধর করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তখন থেকেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা তাঁর ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে আসছিলেন।