বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী বিজয়ী হয়নি। অথচ বিভিন্ন স্থানে দখলদারি ও চাঁদাবাজির হাতবদল হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিতর্কিতদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যা দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
আজ বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। এ সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সন্তোষজনক উন্নতি না হওয়ায় দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ, সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় সিপিবির নেতারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও ঘাতকদের পক্ষের আইনজীবী যিনি ছিলেন, তাঁকেই চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ জন্য সব জায়গায় নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে দলনিরপেক্ষ দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ ও বিতর্কিতদের অপসারণ করতে হবে।
সভায় উপস্থিত নেতারা দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ও নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা এসব পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সিন্ডিকেট (চক্র) ভেঙে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। এ ছাড়া সভায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা, ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংখ্যালঘু, মাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনার ওপর আঘাত-ভাঙচুর ও ‘মব জাস্টিস’ এর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের দাবি জানান দলটির নেতারা।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মোতালেব মোল্লা ও পরেশ কর উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নেতারা পতিত স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িক অগণতান্ত্রিক অপশক্তির আস্ফালন চিহ্নিত করে এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। সভা থেকে আগামী সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সারা দেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় সিপিবি।