দ্যা নিউ ভিশন

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণাসহ ১৭ দফা প্রস্তাব গণ অধিকার পরিষদের

নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকের সামনে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন রাশেদ খান (মাঝে)।

‘জুলাই বিপ্লবে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের’ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার বিধান করাসহ ১৭ দফা প্রস্তাব নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে দিয়েছে নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ।

আজ সোমবার গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন ভবনে গিয়ে দলের প্রস্তাব জমা দেয়। এ সময় সাংবাদিকের সামনেও প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন রাশেদ খান।

গণ অধিকার পরিষদের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা। দলটি ‘জুলাই বিপ্লবে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের’ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাবও দিয়েছে।

গণ অধিকার পরিষদ নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি নিয়েও তাদের পরামর্শ দিয়েছে। দলটি বর্তমান বিতর্কিত সার্চ কমিটির প্রক্রিয়া বাতিল করে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে।

দলটি জাতীয় সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছরের পরিবর্তে চার বছর করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া তারা বলেছে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং উচ্চকক্ষে ১০০ ও নিম্নকক্ষে আসন ৩০০ নির্ধারণ করা; নিম্নকক্ষে সরাসরি ভোটে এবং উচ্চকক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটে সংখ্যানুপাতিক হারে আসন নির্ধারণ করা দরকার।

সংরক্ষিত আসন বাতিল করে সব আসনে সরাসরি নির্বাচন চেয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। তারা ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করা এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।

নির্বাচনে অনিয়ম ও শাস্তির ব্যাপারেও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। প্রস্তাবগুলো হলো নির্বাচনে কোনো প্রার্থী, ভোটার, সমর্থক, প্রার্থীর এজেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, নির্বাচন বিঘ্নিত হয়—এমন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলায় জড়িত হলে ১০ বছরের জেল ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্য কমিশনারদের নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতমূলক ভূমিকা ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা প্রমাণিত হলে ১০ বছরের জেল এবং ১০ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা।

নির্বাচনের কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্র ক্যাডার (বিসিএস থেকে) ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা। জাতীয় নির্বাচনের দিনসহ আগের ও পরের দিন মিলিয়ে নির্বাচনের সময় ছুটি তিন দিন করার প্রস্তাবও দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।

দলটির প্রস্তাবের মধ্যে আরও আছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনপ্রাপ্তিতে ন্যূনতম জেলা, উপজেলায় কার্যক্রম নেই—এমন নামসর্বস্ব দলের নিবন্ধন বাতিল করা। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করে নির্দলীয় রাখা। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া বন্ধ করা এবং ৫০ শতাংশের নিচে ভোট পড়লে পুনরায় নির্বাচন দেওয়া। গুরুতর অনিয়ম, কেন্দ্র দখলসহ নৈরাজ্যকর অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোট গ্রহণ বন্ধ করতে পারবেন—এমন বিধান করা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে নির্বাচনকালে সামরিক বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা ইত্যাদি।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন ভবনে গিয়ে তাঁরা সংস্কার কমিশনের কাউকে পাননি। তাঁরা ই-মেইলের মাধ্যমে দলের প্রস্তাবগুলো জমা দিয়েছেন।

এ সময় গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান এবং মানবাধিকার সম্পাদক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার প্রস্তাব কমিশনের প্রধান খালিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ