স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তাতে মানুষের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
আজ শনিবার ‘সবার আগে সার্বভৌমত্ব, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকায় রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) এ্যাংকর মিলনায়তনে এই আলোচনার আয়োজন করে সাসটেইনেবল সভরেইন বাংলাদেশ ফোরাম নামের একটি সংগঠন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ছাত্ররা অর্জন করেছে, দেশের মানুষ সুফল পেয়েছে। কিন্তু সমস্যাটি হলো তারা এই সুফল নিয়ে বসে থাকতে চায় না। তারা এর পরবর্তী অধ্যায় দেখতে চায়।
মঈন খান বলেন, ‘কেউ যদি আজকের বিজয়কে কুক্ষিগত করে বলতে চায়, আমরাই সব করেছি, আমরাই ভবিষ্যতে সব করব, তাহলে কিন্তু আবার নতুন করে আমরা ফাঁদে পড়ব। যেই ফাঁদে বাংলাদেশ ৫০ বছর ঘুরপাক খেয়েছে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকলে শুধু অস্ত্র দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না। এই জনগোষ্ঠীকে যদি নানাভাবে বিভক্ত করা যায়, তাহলে সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করার মূল ভিত্তি তৈরি হয়। ফ্যাসিস্ট সরকার সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে যে ভয়ংকর কাজটি করেছে, তা হলো জনগণকে ক্রমাগত বিভক্ত করেছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, এই মুহূর্তে যেটা প্রয়োজন, তা হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ঐক্য। প্রতি মুহূর্তে মনে রাখতে হবে, পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ভারতের সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশর অভ্যুত্থানের অর্জনকে নস্যাৎ করে দিতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্য ধরে রেখে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে আমরা তাদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারি।’
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির। এতে বলা হয়, ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনা সরকার লোকচক্ষুর অন্তরালে ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী অনেক চুক্তি ও সমঝোতা করেছে। ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্টের নামে বিনা মূল্যে একতরফা সড়ক ও রেল করিডর দিয়েছে। বিদ্যুৎ খাতকে ভারতনির্ভর করেছে। ভারত বাংলাদেশকে তাদের একচেটিয়া বাজারে পরিণত করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক, আইনজীবী মোহাম্মদ মোহসেন রশীদ, লেখক আবু সাইদ আহমেদ, মেজর (অব.) শামসুজ্জোহা, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহত এমদাদ বাবু প্রমুখ।