বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল)। তিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে। সংস্থাটির সঙ্গে কাজের জন্য এখন তাঁর পরিবর্তে যাতে সরাসরি বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ করতে পারে, সে জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে সরকার।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর বক্তব্য দেন। সম্প্রতি এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপ–প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলাদেশ সরকার ডব্লিউএইচওর কাছে একটি চিঠি দিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার যাতে তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে এবং আঞ্চলিক পরিচালকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না হয়।
অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সায়মা ওয়াজেদ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে যেহেতু আর্থিক ও ফৌজদারি মামলা আছে, তাই ডব্লিউএইচওকে জানানো হয়েছে তাঁর মাধ্যমে যেন যোগাযোগ করতে না হয়। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডব্লিউএইচওকে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত বছরের ১ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। পাঁচ বছরের জন্য তিনি এই পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবার ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বহু মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এসব মামলার মধ্যে কয়েকটিতে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে আসামি করা হয়েছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপ–প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, সায়মা ওয়াজেদ পতিত স্বৈরাচারের পরিবারের সদস্য। তিনি বাংলাদেশের জন্য কতটুকু সহায়তায় আসবেন, সেটিও একটি প্রশ্ন। তাই বাংলাদেশ সরকার চায় তাঁর সঙ্গে লিয়াজোঁ না করে সরাসরি ডব্লিউএইচওর সঙ্গে কথা বলা যায় কি না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস–সচিব শফিকুল আলম বলেন, এখানে ইস্যুটি নৈতিকতার। তাঁর (সায়মা ওয়াজেদ) বিরুদ্ধে আর্থিক ও ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। বিএফআইইউ (কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ) তদন্ত করছে। তাঁর মাধ্যমে কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না। সে জন্য সরকার চাইছে ডব্লিউএইচওর সঙ্গে সরাসরি কাজ করতে। এ বিষয়ে ডব্লিউএইচও কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেটাও যেন জানায়।