বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহায়তা করতে প্রস্তুত।
আজ রোববার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান বলেন, “আমার দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা, শক্তি বা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ ও উদারতার মাধ্যমে মানুষের মন জয় করুন এবং তাদের ভালোবাসা অর্জন করুন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি, জনগণের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার অপরিহার্য। দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমগুলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলে তা অধিক কার্যকর হবে, যা গণতান্ত্রিক বিশ্বেও স্বীকৃত।”
তারেক রহমান অভিযোগ করেছেন, “স্বৈরাচারী হাসিনা দেশের সকল ক্ষেত্রকে নৈরাজ্যকর অবস্থায় রেখে পালিয়েছেন। দেশ ঋণনির্ভর ও আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। শুধু হাসিনা পালিয়ে যাননি, তার বিনা ভোটের মন্ত্রিসভা, এমপি ও নিয়োগকৃত বায়তুল মোকাররমের খতিবও পালিয়েছে। দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জনগণ এখন সম্মান ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চায়।”
তিনি উল্লেখ করেছেন, “রাষ্ট্র সংস্কারকে কার্যকর করতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি দলের রাজনৈতিক সংস্কারের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিএনপি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে, যা নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে দুই মেয়াদের সীমা, উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন এবং সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত।”
তারেক রহমান আরও বলেন, “গণভবন এখন স্বৈরাচারী হাসিনার দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপকর্মের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে গণভবনকে গুম, খুন, অপহরণ এবং গণহত্যার মিউজিয়াম হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে।”
শেষে, তিনি তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে, প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে আইন নিজের হাতে না নেওয়ার আহ্বান জানান এবং কোনো ধরনের হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হওয়ার দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন।