নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে দলের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত আটটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে কিশোরগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে দলের দুটি পক্ষ—উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সদস্য মাসুদ রানা পাটোয়ারীর নেতৃত্বাধীন একটি দল এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তাজুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আরেকটি দল।
গতকাল রাত সাড়ে সাতটার দিকে ওই কর্মসূচিকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। উভয় পক্ষ কিশোরগঞ্জ বাজার এলাকায় পৃথক স্থানে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে মাসুদ রানা পাটোয়ারীর নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দেয়। মামুন-তাজুলের নেতৃত্বে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা পাল্টা ধাওয়া দেয়। এতে দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। সংঘর্ষে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
মাসুদ রানা পাটোয়ারী অভিযোগ করেন, ‘আমাদের বঞ্চিত করে পক্ষপাতমূলকভাবে উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ। আমরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য বৈধভাবে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলাম, কিন্তু তারা সেই কর্মসূচিকে ভণ্ডুল করতে একই স্থানে আরেকটি কর্মসূচির আয়োজন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।’
অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে মাসুদ রানা পাটোয়ারীর সদস্য পদ স্থগিত রয়েছে। তিনি এবং তাঁর সমর্থকেরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন, যার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র মণ্ডল জানান, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে দলের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’