৩০ বছর বয়সী বর আগেও দুবার বিয়ে করেছেন এবং এবার তৃতীয় বিয়ের জন্য এসেছিলেন। ১৩ বছর বয়সী কনের বাবা নেই, এবং কনের খালু এই বিয়ের আয়োজন করেছেন। বরযাত্রীদের খাবারের আয়োজন চলছিল, এমন খবর রাজশাহীর পবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেনের কাছে পৌঁছালে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বর, বরর বাবা এবং কনের খালুকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আজ শুক্রবার উপজেলার বাগশৈল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে কিশোরীকে পবা উপজেলার বায়ায় অবস্থিত মহিলা ও শিশু–কিশোরী নিরাপদ হেফাজতের আবাসনে (সেফ হোম) পাঠানো হয়।
দণ্ডিত বর আশরাফুল ইসলাম বাক্প্রতিবন্ধী। তার বাবার নাম শুকুর উদ্দিন এবং তারা বাগশৈল গ্রামের বাসিন্দা। কনের খালুর নাম মো. জাফর আলী, যিনি একই গ্রামের বাসিন্দা। কিশোরীটি পবা উপজেলার দারুশা পপুলার মডেল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, কনের খালু জাফর আলী ঢাকায় তার নিজের মেয়েকে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার পরও বিয়ে দেননি, কিন্তু মাত্র সপ্তম শ্রেণিতে পড়া পালক মেয়েকে ৩০ বছরের এক বাক্প্রতিবন্ধীর সঙ্গে বিয়ে দিতে যাচ্ছেন। কিশোরীর মা নানির বাড়িতে থাকেন এবং তিনি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় জাফর আলী বাল্যবিবাহের আয়োজনের বিষয়ে ভুল স্বীকার করেন। বরর বাবা শুকুর উদ্দিন জানান, তিনি আগে দুবার ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলেন; প্রথম স্ত্রী চলে গেছেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী পছন্দ না হওয়ায় তালাক হয়েছে। তিনি বলেন, এবারের বউ যাতে থাকে, এজন্য তিনি কিশোরীর নামে এক বিঘা জমি লিখে দিয়েছেন।
ইউএনও সোহরাব হোসেন বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন–২০১৭ অনুযায়ী বর এবং অভিভাবকদের ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে বর, বরর বাবা এবং কনের খালুকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে, আর কিশোরীকে সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে।