আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন নেয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সোমবার (১০ মার্চ) ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণবিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়টি জানিয়েছেন।
ইসিতে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আগের আইন অনুযায়ীই নয়া দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৯০ক এর অধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮-এ উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত নির্দেশিকা মোতাবেক বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ পূরণপূর্বক আগামী ২০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে চাইলে তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যেকোনো একটিতে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসন লাভের সমর্থনে প্রামাণিক দলিল।
অথবা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যেকোনো একটিতে দরখাস্তকারী দল কর্তৃক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নির্বাচনি এলাকায় প্রদত্ত মোট ভোট সংখ্যার শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট লাভের সমর্থনে কমিশন বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র।
অথবা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ, তা যে নামেই অভিহিত হোন না কেন, একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর, অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দফতর এবং অন্যূন একশটি উপজেলা বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর দফতর এবং উক্তরূপ প্রতি উপজেলায় বা, ক্ষেত্রমত, থানায় অন্যূন দুইশ ভোটার সদস্য হিসেবে দলের তালিকাভুক্ত থাকার সমর্থনে প্রামাণিক দলিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিবন্ধীকরণে আগ্রহী রাজনৈতিক দলকে নিজস্ব লেটারহেড প্যাডে দরখাস্ত করতে হবে এবং দরখাস্তের সঙ্গে আবশ্যকীয় দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে। সেগুলো হলো–
‘দলের গঠনতন্ত্র, দলের নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সব সদস্যের পদবীসহ নামের তালিকা, দলের নামে রক্ষিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং উক্ত অ্যাকাউন্টের সর্বশেষ স্থিতি, দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ, দলের নিবন্ধনের দরখাস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত ক্ষমতাপত্র এবং নিবন্ধন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য পাঁচ হাজার টাকা সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবরে জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি।’
২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন আইনি সংস্কার এনে নিবন্ধন প্রথা চালু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ৫৪টি দল ইসির নিবন্ধন পেয়েছে।
এর মধ্যে জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য ও গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দেয় ইসি।
এদিকে, নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণে ব্যর্থ বা আদালতের আদেশে পাঁচটি দলের (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এ নিয়ে ইসির নিবন্ধিত দলের সংখ্যা এখন ৪৯টি।