সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আজও জমা পড়েনি, ১১৩ বার পেছাল তারিখ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আজ সোমবারও আদালতে জমা দেওয়া হয়নি। এর ফলে, এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১১৩ বার পেছানো হলো।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ ছিল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন। কিন্তু পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এর পর, ঢাকা সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মাহবুবুল হক নতুন তারিখ হিসেবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এক দশক পর সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। ৪ নভেম্বর, মামলার আগের তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের কাছ থেকে নথিপত্র গ্রহণ করে পিবিআই তদন্ত শুরু করেছে।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক। তিনি জানিয়েছেন, “র্যাবের কাছ থেকে মামলার সব কাগজপত্র বুঝে পেয়েছি এবং তদন্ত পুনরায় শুরু করেছি।”
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাগর ও রুনি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন, আর রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। তাদের হত্যা মামলার প্রথম দফায় শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও, পরে তা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ডিবি তদন্তে ব্যর্থতা স্বীকার করে, এরপর আদালত র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। ২০১৫ সালে র্যাব আদালতকে জানিয়েছিল, সাগর-রুনির বাসা থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনায় অজ্ঞাত দুই পুরুষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবের পরীক্ষায় তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এ পর্যন্ত সাগর-রুনি হত্যা মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এর মধ্যে দুজন জামিনে মুক্ত আছেন এবং বাকি ছয়জন কারাগারে আছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর, হাই কোর্ট স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে, মামলার তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে। সেইসঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।