গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দিনমজুর জামাল মিয়া জামিনে মুক্ত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামাল মিয়া জেলার কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসলে তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে কথা বলার সময় জামাল মিয়া প্রথম আলোকে জানান, “বাড়ি ফিরে আমার সন্তানদের বুকে জড়িয়ে ধরলে মনে হলো, আমার বুকের ভেতরের আগুন নিভে গেছে। ছেলে-মেয়ে আমাকে জড়িয়ে গালে চুমু খেয়েছে। বাড়ি ফেরার পর ওদের মধ্যে শান্তি ফিরে এসেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমি কোনো রাজনীতি করি না, তাই বুঝতে পারছি না কেন আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো।”
৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে কোটালীপাড়া থানা-পুলিশ জামাল মিয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। সদর থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৯ নভেম্বর জেলহাজতে পাঠায়।
জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম গত ১২ অক্টোবর যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার এক সপ্তাহ পর মারা যান। এর পর জামাল মিয়া তাঁর চার সন্তান সাজ্জাদ মিয়া (১৩), আফসানা আক্তার (৬) এবং এক মাস বয়সী যমজ বোন আনিশা ও তানিশাকে লালন-পালন এবং বৃদ্ধ মাকে দেখভাল করে আসছিলেন। জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর চার সন্তান ও বৃদ্ধ মা অসহায় হয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, জামাল মিয়া কোনো রাজনীতি বা মারামারিতে জড়িত না থাকলেও তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম নেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জামালের আইনজীবী চামেলী আক্তার গত মঙ্গলবার জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ মামুন জামিন মঞ্জুর করেন।