দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৪:৩৯

ক্যানসার কোষ ধ্বংসে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলুন

ক্যানসারের ক্ষেত্রে অনেক সময় সুস্পষ্ট কারণ নির্ধারণ করা কঠিন, তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য সচেতনতার প্রয়োজন। ক্যানসারের কারণ ও ঝুঁকি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে এ জটিল রোগ থেকে অনেক মানুষ মুক্ত থাকতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ শতাংশ ক্যানসারের জন্য আমাদের খাদ্যাভ্যাস দায়ী, এবং ধূমপানের কারণে ৩০ শতাংশ মানুষের ক্যানসার হয়। এ কারণে ক্যানসার প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ওপর জোর দেওয়া হয়। উন্নত দেশে নারীদের ফুসফুস ক্যানসার ছাড়া প্রায় সব ধরনের ক্যানসারে মৃত্যুহার কিছুটা কমে এসেছে। এটি সম্ভব হয়েছে রোগ নির্ণয়ে আধুনিক প্রযুক্তি, চিকিৎসা দক্ষতা এবং রোগীর জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে।

 

**প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিরোধ:** স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব, যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই করা যায়। বাংলাদেশে মুখ, ফুসফুস, গলা, খাদ্যনালি ও কণ্ঠনালির ক্যানসারের উচ্চহার রয়েছে, যা মূলত তামাকজাত দ্রব্য (জর্দা, গুল) এবং ধূমপানের কারণে। মুখের ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেশে তামাকপাতা চিবানোর অভ্যাস একটি বড় কারণ; যেখানে অন্যান্য দেশে এর হার ১ থেকে ৩ শতাংশ। ফুসফুস ক্যানসারের ৮০ শতাংশ ধূমপানের কারণে হয়, এবং ধূমপায়ীর তুলনায় অধূমপায়ীর মধ্যে এ ঝুঁকি ২০ গুণ কম। তাই ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য বর্জন করলে ক্যানসারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এ বিষয়ে জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য হাসপাতাল কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। আরও গবেষণায় দেখা গেছে, মদ্যপান যকৃত, মুখ, গলা ও খাদ্যনালির ক্যানসারের একটি বড় কারণ। এছাড়া বেশি চর্বিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বৃহদন্ত্র, স্তন এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে, বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার (শাকসবজি, ফল) বৃহদন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

 

**দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিরোধ:** বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সার্জারি, রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপি গ্রহণ করে প্রায় ৩৫ শতাংশ ক্যানসার রোগীকে পুরোপুরি সারানো সম্ভব। রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে, এই হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই সচেতন জীবনধারা, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব।

 

**লেখক:** সিনিয়র কনসালট্যান্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, ধানমন্ডি, ঢাকা

যোগাযোগ: ০১৭৪২৩০৪২৪৬; ০৯৬৬৬৭১০০০১

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট