আগস্ট মাসে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৫২১ জন, যা বছরের প্রথম সাত মাসের চেয়ে বেশি। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৬৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২ হাজার ৮৪১ জন। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে ভর্তি হন ৬ হাজার ৩২০ জন, আর আগস্টেই ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৫২১ জন। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট ৮৩ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে আগস্টে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য মাসগুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল: ফেব্রুয়ারিতে ১৪, মার্চে ৩, এপ্রিলে ২, মে ১২, জুনে ৮, এবং জুলাইয়ে ১২ জন। আগস্টে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুলাইয়ের তুলনায় দ্বিগুণ।
ডেঙ্গু রোগীর শনাক্তকরণ হিসাবেও আগস্টে ৬ হাজার ৫২১ জন শনাক্ত হয়েছেন, যা বছরের প্রথম সাত মাসের মোট শনাক্তকৃত ৬ হাজার ৩২০ জনের চেয়ে বেশি। জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৫, ফেব্রুয়ারিতে ৩৩৯, মার্চে ৩১১, এপ্রিলে ৫০৪, মে ৬৪৪, জুনে ৭৯৮, এবং জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯ জন শনাক্ত হন।
বর্তমানে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ৩৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন, এর মধ্যে ঢাকায় ৭৮০ এবং অন্য বিভাগের হাসপাতালে ৫৫৩ জন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজীর আহমেদ জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এ জন্য এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শনাক্তকরণ কীট ও আইভি ফ্লুয়িড সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় মজুতও বাড়াতে হবে।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নির্ধারণের জন্য আগামীকাল সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি বৈঠক ডেকেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর ডেঙ্গু মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। বৈঠকে রোগীর চিকিৎসা, হাসপাতাল প্রস্তুতি, চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।