সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ১১টি হত্যা মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া গেছে। ২৫ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা মহানগর এবং ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় এসব মামলা করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১০৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৯৭টি হত্যা মামলা।
নতুন দায়ের করা ১১টি মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারগুলোতে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, সাভার ও আশুলিয়ায় ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিরীহ আন্দোলনকারীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ র্যাব, পুলিশ, বিজিবির সদস্যরা নির্বিচার গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আন্দোলনকারীদের স্বজনেরা মারা যান।
মামলার কাগজপত্রের তথ্যানুযায়ী, যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে মো. জিসান ও আসাদুল হক, মিরপুরে রিতা আক্তার ও মিজানুর রহমান, সাভারে মেহেদী হাসান, আল আমিন ইসলাম, আবদুল কাইয়ুম ও আবদুল আহাদ, এবং আশুলিয়ায় জাহিদুল ইসলাম, শাইখ আজহারুল ইয়াসিন ও শাওন মারা যান।
গত ৩১ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় করা জিসান হত্যা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০ জুলাই আন্দোলনকারীদের পানি পান করানোর জন্য রায়েরবাগে যান মো. জিসান। তখন ১০ থেকে ১২টি গাড়ি পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী গুলি চালায়। গুলিতে জিসান আহত হন এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। জিসানের মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে তাঁর স্ত্রী রাবেয়া মিষ্টি ২৯ জুলাই আত্মহত্যা করেন। এই মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মিরপুর থানায় ২৯ আগস্ট দায়ের করা মামলায় রিতা আক্তারকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনা ও ৩৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। রিতা আক্তারের বাবা আশরাফ আলী জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট তাঁর মেয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে মিরপুরে যান। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ১৪-দলীয় জোটের ৭০০ থেকে ৮০০ নেতা-কর্মী হামলা চালায় এবং যৌথ বাহিনী গুলি করে। গুলিতে রিতা আক্তার গুরুতর আহত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।