দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুই ব্যাংক কর্মকর্তা। তারা হলেন আবদুল নাছের ও মিজানুর রহমান, যাঁরা ইসলামী ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় কর্মরত ছিলেন। সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ কবির উদ্দিন প্রামাণিকের আদালতে তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
সাক্ষ্য দেওয়ার আগে সাবেক সংসদ সদস্যকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, এ সময় তাঁকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো হয়। আধা ঘণ্টার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাঁকে আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ জানান, ব্যাংকে আবদুর রহমান বদির অবৈধভাবে অর্জিত টাকার বিষয়ে দুই ব্যাংক কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত আগামী ৭ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৪ টাকার তথ্য গোপন এবং ৬৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। পরবর্তী বছরে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সে সময় আবদুর রহমান বদি টেকনাফ পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে মামলাটি কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়, যা ২০১৭ সালে পুনরায় সচল হয়।
২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরু হয়। এ বিচারের বিরুদ্ধে বদি হাইকোর্টে যান, কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে ২২ সেপ্টেম্বর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
গত ২৪ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭। তাঁকে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর টেকনাফ থানায় করা একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাদক চোরাচালানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আবদুর রহমান বদির নাম রয়েছে, যেখানে ‘মাদকের গডফাদার’ হিসেবে তাঁর চার ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নামও রয়েছে।