কর্মক্ষেত্রের সাজসজ্জা কেতাদুরস্ত না হলেও পেশাদারিত্ব ফুটে উঠতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন অফিসে পরার জন্য বেশ কয়েকটি সেট পোশাক প্রয়োজন। প্রতিবার পরার পর সেগুলো ধুয়ে, শুকিয়ে এবং ইস্ত্রি করে আবার পরার উপযোগী করতে হয়। এই নিয়মিত ঝামেলার সঙ্গে গরম আবহাওয়ার কারণে হালফ্যাশনের নকশা-কাটের পোশাক বেছে নিতে কিছুটা দ্বিধা হতে পারে।
কিন্তু প্রতিদিনের পোশাকে নিজেদের স্বকীয়তা থাকা উচিত। আবহাওয়া ও ফ্যাশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মক্ষেত্রে পরিধানের জন্য পোশাক বেছে নিলে ভালো। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনার আফসানা ফেরদৌসী।
### কাপড় কেনার আগে
নিয়মিত পরিধানের পোশাকের কাপড় টেকসই হতে হবে। এমন কাপড় নির্বাচন করুন যা বারবার ধোয়ার পরও সহজে নষ্ট হয় না। বর্তমানে, গরম আবহাওয়ার জন্য সুতি কাপড় সবচেয়ে ভালো। এছাড়া, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি পরিবেশবান্ধব কাপড় যেমন ভিসকস ও লিনেন আরামদায়ক এবং গরমের জন্য উপযোগী। কর্মক্ষেত্রে জর্জেট এবং সিল্কের কাপড় পরা এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো সংবেদনশীল এবং সবসময় ধোয়া যায় না। তবে সিল্ক বা জর্জেটের স্কার্ফ বা ওড়না পরা যেতে পারে।
### সময়োপযোগী নকশা-কাট
কো-অর্ড সেট এখনকার জনপ্রিয় ফ্যাশন। এটি হালকা, সহজ, আরামদায়ক এবং পরিপাটি, যা কর্মক্ষেত্রে ও অফিসের পর অনুষ্ঠানে পরা যায়। নারীদের ফরমাল প্যান্টে বিভিন্ন নকশা যেমন ফ্লেয়ার, ফিশ কাট, বুট কাট, সিগারেট প্যান্ট, এবং হাই-ওয়েস্টেড প্যান্ট মানানসই। ঢিলেঢালা লম্বা শর্ট বা লম্বা কামিজও নির্বাচন করতে পারেন।
এছাড়া, আধুনিক ট্রেন্ড অনুযায়ী ব্লেজার, লং বা সেমি লং ড্রেস, শ্রাগ ইত্যাদি পোশাকও যুক্ত করা যেতে পারে। আফসানা বলেন, আরামের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে এখন আনুষ্ঠানিক থেকে ক্যাজুয়াল লুকের প্রতি বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন সবাই।
### রঙের দিকে নজর
রঙ নির্বাচন একান্তই ব্যক্তিগত, তবে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ বুঝে পোশাকের রং বাছাই করতে হবে। উজ্জ্বল রং যেমন টকটকে লাল, নিয়ন সবুজ বা গাঢ় হলুদ এড়িয়ে চলা ভালো। কর্মক্ষেত্রের জন্য সাদা, হালকা গোলাপি, নীল, ধূসর, কালো, ছাই এবং বাদামি রং উপযোগী। সবসময় হিজিবিজি প্যাটার্নের বদলে হালকা, এক রকম ছাপের কাপড় নির্বাচন করুন।
### তৈরি জামায় সহজ সমাধান
তৈরি পোশাকের ফিটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেনার আগে ভাবতে হবে আপনি কেমনটা চান—অন্তত আঁটসাঁট নাকি ঢিলেঢালা। কেনার আগে পোশাক পরে দেখুন। আফসানা বলেন, তৈরি জামা কিনে কাপড়ের মান যাচাই করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই শুধু সুন্দর নকশা দেখেই না, কাপড়ের গুণমানও নিশ্চিত করুন।
প্রতিদিন অফিসে পরার জন্য বেশি নকশা করা জামা এড়িয়ে চলাই ভালো। কম নকশার এক রঙের কাপড়ের পোশাকগুলো যেমন টেকসই, তেমনই দেখতে স্মার্ট।
### যাঁরা শাড়ি পরেন
শাড়ির একঘেয়েমি কাটাতে ভিন্ন ভিন্ন নকশার ব্লাউজ ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লাউজের গলার নকশা বোট, হাই-নেক, হল্টার এবং শার্ট কলার হতে পারে। হাতের নকশায় বেলবটম, থ্রি-কোয়ার্টার, ফ্লেয়ার বা স্ট্রেইট কাট থাকতে পারে। দীর্ঘ সময় পরিধানে অস্বস্তি এড়াতে ব্লাউজ খানিকটা ঢিলা করে তৈরি করা উচিত। যদি তৈরি করার ঝক্কি না নিতে চান, তাহলে ক্রপ টপস বা শার্ট দিয়েই শাড়ি পরে ফেলতে পারেন। আফসানা বলেন, মেয়েরা এখন নানা উপায়ে শাড়ি পরছে, যেমন আঁচল সামনে দিয়ে, বেল্ট দিয়ে। নিয়মিত পরার জন্য সুতি বা তাঁতের শাড়ি ছাড়াও প্রাকৃতিক টাই-ডাই ও ওজনহীন সিল্ক বা জর্জেটের শাড়ি পরা যেতে পারে।