বাড়ি নির্মাণে বালু একটি অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। এটি কংক্রিটের মিশ্রণ থেকে শুরু করে গাঁথনি পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ব্যবহৃত হয়। একটি মজবুত ও টেকসই কাঠামোর জন্য প্রকৌশলীরা নির্মাণে ব্যবহৃত বালুর বিভিন্ন ধরনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। তাই বিভিন্ন উৎস থেকে বালু সংগ্রহ করে নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়।প্রস্তুতকৃত বালুর তুলনায় নদীর তলদেশ থেকে উত্তোলিত বালু আমাদের দেশে বেশি ব্যবহৃত হয়। ফলে নদী থেকে অবৈধ বা অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের বিষয়টি প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে। তবে সমুদ্রও বালুর একটি বড় উৎস হতে পারে। তাহলে প্রশ্ন আসে, কেন সমুদ্রের বালু নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয় না? শুধু সমুদ্রের বালুর কথাই কেন বলা হচ্ছে? মরুভূমির বালুও তো নির্মাণে ব্যবহৃত হয় না।
বাড়ি নির্মাণে বালুর কিছু বৈশিষ্ট্য যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতিতে পাওয়া বালুকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়: বড়, মাঝারি ও মিহি। বালুকণার আকৃতির সঙ্গে এর স্থায়িত্ব এবং ঘনত্বের যোগসূত্র রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মসৃণ গোলাকার বালুকণার তুলনায় অমসৃণ কৌণিক বালুকণার প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
নির্মাণের জন্য বালুর যে গুণাবলী থাকা প্রয়োজন, তা সাধারণত সমুদ্র ও মরুভূমির বালুর মধ্যে নেই। মরুভূমির বালু সাধারণত খুবই মসৃণ এবং সূক্ষ্ম হয়, যা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক বন্ধনে অংশ নিতে অক্ষম। মরুভূমির বালু দিয়ে কোনো কাঠামো গঠন করা হলে, এর ছোট কণার কারণে কংক্রিটে পর্যাপ্ত শক্তি থাকবে না। তাছাড়া, মরুভূমির বালুর উন্মুক্ত কাঠামো শুকনা অবস্থায় ভার বহন করতে পারলেও ভিজে গেলে তা ভেঙে পড়বে।
এছাড়া, সমুদ্রের বালুও মসৃণ ও গোলাকার, এবং এতে লবণের উপস্থিতি থাকে, যা ইস্পাত ও লোহায় মরিচা ধরাতে পারে। মোদ্দা কথা, সমুদ্রের বালু দিয়ে তৈরি কাঠামো টেকসই হয় না।