পূজোর দিনে চারদিকে পূজার গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর হাজির হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব, দুর্গা পূজা। দুর্গাপূজার আনন্দ অন্যান্য যেকোনো আনন্দের তুলনায় খুবই বিশেষ। মা দুর্গা প্রতি বছর স্বর্গ থেকে মর্ত্যে মাত্র পাঁচ দিনের জন্য আসেন। এই পাঁচ দিন যেন চোখের পলকেই চলে যায়। মা দুর্গা আসেন পৃথিবীর শান্তি রক্ষার জন্য এবং অশুভ শক্তির বিনাশে।
এই পূজার পাঁচ দিনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কী পোশাক পরবেন, কখন পরবেন—এই নিয়ে নারী-পুরুষ সবার মধ্যেই থাকে প্রচণ্ড আগ্রহ। পূজোর বিভিন্ন দিনগুলোর জন্য পোশাকের পরিকল্পনা অনেকেই আগে থেকেই করে রাখেন। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, পূজার দিনগুলিতে কীভাবে সাজতে পারেন:
**ষষ্ঠী**
ষষ্ঠীর দিনে হালকা রঙে ও সহজ সাজে শুরু করুন। মণিপুরী বা প্রিন্টেড সুতি শাড়ি, সালোয়ার কামিজ কিংবা কুর্তি—যেকোনোটি পরতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে হালকা শেডকে প্রাধান্য দিন, কারণ ষষ্ঠী পূজার সূচনা এবং শুরুর দিনটি হালকা সাজে শুরু করলে পূজার রেশ আরও সুন্দর হবে।
**সপ্তমী**
সপ্তমী দিনটিকে শুভ্র, সতেজ ও সজীব রাখতে হবে। পূজার সময় গরম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যদি শাড়ি পরার পরিকল্পনা থাকে, হালকা রঙের জামদানি বা টাঙ্গাইল শাড়ি নির্বাচন করুন। সকালের সাজের জন্য হালকা রঙের যেকোনো শাড়ি বেশ মানানসই হবে।
সপ্তমীর রাতে আনন্দের মাত্রা দ্বিগুণ হয়, তাই সাজের দিক থেকেও কিছুটা গাঢ় ও গর্জিয়াস পোশাক বেছে নিন। বিশেষ করে কারচুপি, আনারকলি, নায়রা—এই ধরনের পোশাকগুলো সপ্তমীর রাতের জন্য উপযুক্ত।
**অষ্টমী**
অষ্টমীর সাজ মানেই সাবেকী আভিজাত্য। এই দিনে লাল, সাদা, গোলাপি, কমলা বা নীল রঙের শাড়ি পরার ধুম লেগে যায়। সকালে বা রাতে—সব সময়েই শাড়ি পরা হয় এবং এই দিনে সাজের জাঁকজমক থাকে বিশেষভাবে। জামদানি, কাতান, বেনারসি, বালুচুরি, কাঞ্চিপুরাম—এ ধরনের শাড়ি অষ্টমীর সাজের জন্য উপযুক্ত।
**নবমী**
নবমীর দিন সাজে একটু ভিন্নতা আনুন। শাড়ির বদলে সালোয়ার কামিজ, স্কার্ট, গাউন বা লেহেঙ্গা পরার দিকে মনোযোগ দিন। গাঢ় কিন্তু উজ্জ্বল রঙের পোশাক বেছে নিন, যা স্টোন, এমব্রয়ডারি বা কারচুপির কাজ দ্বারা গর্জিয়াস হয়ে উঠবে।
**শুভ বিজয়া দশমী**
পূজার সমাপ্তি, বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। মনটা একটু দুঃখে হলেও দশমীর আনন্দ রয়েছে। দশমীর সাজের ক্ষেত্রে সাধারণত সাদা ও লাল রঙের প্রাধান্য দেওয়া হয়। সাদা-লাল শাড়ি বা পোশাক পরেই সকল বয়সী নারী সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দশমীর সাজে থাকে স্নিগ্ধতা ও আভিজাত্য, এবং ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে চুরি, কানের দুল, গলার হার, আংটি, জুতা ও ব্যাগ ব্যবহার করা হয়, যা পুরো সাজটিকে আকর্ষণীয় করে তোলে।