এশিয়ার ছয়টি দেশে বাংলাদেশিরা আগাম ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন, তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে মালদ্বীপ। ভিসার ঝামেলা ছাড়াই সহজে যাতায়াতের সুযোগ থাকায় অনেকেই এখন মালদ্বীপ ভ্রমণ করছেন। ঢাকা থেকে মালদ্বীপের মালের উদ্দেশ্যে সরাসরি ফ্লাইট এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও ট্যুর অপারেটরদের সাশ্রয়ী ভ্রমণ প্যাকেজের কারণে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটি বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য越来越 জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
একসময় বছরে ৩ থেকে ৪ হাজার বাংলাদেশি মালদ্বীপে ভ্রমণ করতেন। তবে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ১৬,৮০৭-এ পৌঁছায়। ২০২৩ সালে মালদ্বীপ সফর করেছেন ২৮,৩৩৬ বাংলাদেশি, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৬৮.৬ শতাংশ বৃদ্ধি। বর্তমানে মালদ্বীপে ভ্রমণকারী বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। মালদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে ১,৯৯৭ জন বাংলাদেশি মালদ্বীপে ভ্রমণ করেছেন। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ২০,৮৪০ বাংলাদেশি পর্যটক সেখানে গেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। বর্তমানে মালদ্বীপের পর্যটকদের শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬।
বাংলাদেশি পর্যটকদের সঙ্গে সঙ্গে মালদ্বীপে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১৩,৫৯,২৩২ জন বিদেশি পর্যটক মালদ্বীপ সফর করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ১০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি।
২০২৩ সালে মালদ্বীপ ভ্রমণকারী শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় প্রথম দুটি অবস্থানে রয়েছে ভারত ও রাশিয়া। গত বছর প্রায় সমান সংখ্যক ভারতীয় (২,০৯,১৯৮) ও রুশ (২,০৯,১৪৬) পর্যটক মালদ্বীপ সফর করেছেন। তবে চলতি বছরে ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ৮১,৫০৫ জন ভারতীয় মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯.৮ শতাংশ কম।
অন্যদিকে, চীনা পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত আট মাসে ১,৯৮,০৫৭ জন চীনা পর্যটক মালদ্বীপে ভ্রমণ করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৬৩.৮ শতাংশ বেশি।
মালদ্বীপের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে পর্যটন। দেশটিতে হাজার হাজার দ্বীপ রয়েছে, যা দুই শ্রেণিতে বিভক্ত—লোকাল আইল্যান্ড এবং রিসোর্ট আইল্যান্ড। লোকাল আইল্যান্ডে স্থানীয় জনগণ বাস করেন, কিন্তু সেখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। অন্যদিকে, রিসোর্ট আইল্যান্ডে শুধুমাত্র রিসোর্ট আছে। ১৯৭২ সালে একটি দ্বীপে দুটি রিসোর্ট নিয়ে পর্যটন শিল্পের সূচনা করে মালদ্বীপ, বর্তমানে দেশটিতে ১৮০টিরও বেশি রিসোর্ট রয়েছে, পাশাপাশি রয়েছে হোটেল, গেস্টহাউস এবং সাফারি জাহাজ।