সিগারেটের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে এবং কার্যকর হারে করারোপ করার মাধ্যমে এই ক্ষতিকারক পণ্যের ব্যবহার কমানোর বিষয়টি প্রমাণিত। তবে, বাংলাদেশে সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপ না থাকায় এখনও ১৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে বয়সী নাগরিকদের মধ্যে ১৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ ধূমপানে আসক্ত। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, সিগারেটের ওপর গতানুগতিক করারোপের পরিবর্তে কার্যকর করারোপের একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘সিগারেটে কার্যকর করারোপ’ শীর্ষক সেমিনারে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক ড. এস. এম. জুলফিকার আলী। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল, সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজানা করিম, এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম। সেমিনারের প্রেক্ষাপট পত্র উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী।
প্রেক্ষাপট পত্র উপস্থাপনকালে আব্দুল্লাহ নাদভী উল্লেখ করেন যে, সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের অভাবে নাগরিকদের স্বাস্থ্য ক্ষতির পাশাপাশি প্রতি বছর প্রায় ৬ হাজার ৬ শত কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ড. শিমুল আরও বলেন, সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে কার্যকর করারোপ করলে ধূমপানের ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশেষ করে কিশোর-তরুণদের ধূমপান থেকে বিরত রাখতে জাতীয় বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
ড. নাজমুল বলেন, তামাক কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সক্রিয় হতে হবে। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর শতাংশভিত্তিক করারোপের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করলে সরকারের কর আয় বাড়বে এবং কর ফাঁকি রোধ করা যাবে।
ড. এস. এম. জুলফিকার আলী সমাপনী বক্তব্যে সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে মাথাপিছু আয় এবং মূল্যস্ফীতির তুলনায় সিগারেটের দাম যথেষ্ট না বাড়ানোর সমালোচনা করেন।