মুখের গঠন ও গায়ের রঙের সঙ্গে যেমন মেকআপের ধরন ও কালার প্যালেট বদলায়, তেমনই চুলের সাজের ক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হয় চুলের দৈর্ঘ্য ও ঘনত্বের মতো বিষয়গুলো। তাই সঠিক হেয়ারস্টাইল বেছে নেওয়ার কিছু টিপস নিয়ে এই আয়োজন।
সাজগোজ মানেই মেকআপ নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্ট! মুখের গঠন, ত্বকের টোন, চোখ ও ঠোঁটের আকৃতি অনুযায়ী সাজ ঠিক করেন। কিন্তু চুলের সাজে তেমনটা করা হয় না। হয় খোলা চুল, না হয় খোঁপা বা পনিটেল, আর সঙ্গে ফুলের মালা বা হেডব্যান্ড। মুখের সঙ্গে মানানসই হচ্ছে কি না, সেটা অনেকেই ভাবেন না। অনেকে তো ‘খোলা চুলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়’—এই ধারণায় চুল খোলাই রাখেন। কিন্তু সব সময় চুল খোলা রাখা কতটা সহজ?
এক্সপেরিমেন্ট করতে গেলে সময় ও ধৈর্যের প্রয়োজন। আর চুলের ট্রেন্ড যত আধুনিক, ঝামেলাও তত বেশি। ইউটিউব বা ইন্টারনেট দেখে নতুন স্টাইল শিখলেও বাস্তবে সেটা করা সহজ নয়। তাই অনেকে একঘেয়ে হেয়ারস্টাইল মেনে নিয়ে আপস করেন। কিন্তু তাতেও সমস্যা দেখা দেয়—বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় চুলের এক রকম স্টাইল, আর ফেরার সময় সেটা হয়ে যায় আরেক রকম! তাই চুলের সাজ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা বেশ কঠিন। সঠিক হেয়ারস্টাইল বেছে নেওয়া ও চুল ম্যানেজ করার জন্য কিছু টিপস রইল সবার জন্য।
### কোন চুলে কোন সাজ
শুধু চুলের দৈর্ঘ্য নয়, চুলের ঘনত্বের দিকেও নজর দিন হেয়ারস্টাইল বাছার সময়।
– **লম্বা বা মাঝারি ঘন চুল**: হাই বা স্লিক পনিটেল, সাইড বান, আপডু বা বিভিন্ন ধরনের বিনুনি ট্রাই করুন। চুল খুলে রাখতে চাইলে হাফ আপডু ভালো বিকল্প হতে পারে।
– **ছোট ও ঘন চুল**: ওয়াটারফল ব্রেড, সামুরাই বান বা হাফ পনিটেল চেষ্টা করুন। চুলের টেক্সচারে খুব বেশি এক্সপেরিমেন্ট না করাই ভালো, আর হেয়ার অ্যাকসেসরিজ এড়িয়ে চলুন।
– **ছোট ও পাতলা চুল**: হেয়ার পাফ, ফ্রেঞ্চ বান বা সাইড টুইস্ট ভালো দেখাবে। হেয়ার অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করলে চুলের খুঁত আড়াল হবে।
– **লম্বা ও পাতলা চুল**: ফিশটেল বা পাফি ব্রেড চেষ্টা করতে পারেন। বিচ ওয়েভস বা ক্লিক পনিটেলও পাতলা চুলে মানানসই।
– **কোঁকড়া চুল**: নানা ধরনের বান, ফ্রেঞ্চ ব্রেড বা সামুরাই বান ভালো দেখাবে।
– **চওড়া বা উঁচু কপাল**: হেয়ার পাফ বা ব্যাকব্রাশ এড়িয়ে চলুন, কারণ তা কপাল বড় দেখাবে।
### গরমে কেমন হবে চুলের সাজ
যাদের ছোট চুল, তাদের জন্য স্টাইল করা তুলনামূলক সহজ। স্ট্রেইট চুলে হালকা ব্লো ড্রাই বা সামান্য পাফ করে ক্লিপ ব্যবহার করতে পারেন। লম্বা চুলের ক্ষেত্রে সেরাম ব্যবহার করে স্ট্রেইট করে রাখা যায়। ব্লো ড্রাই না করাই ভালো, কারণ এতে চুল ফুলে থাকে। ফ্রেঞ্চ বেণি বা সাইড সিঁথি ভালো অপশন।
### টিপস
– চুল সব সময় শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। ঘামে বা বৃষ্টিতে ভিজে গেলে দ্রুত ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
– প্রতিদিন শ্যাম্পু করুন, বিশেষ করে বাইরে গেলে। ঘরে থাকলে এক দিন পর পর শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
– ভেজা চুলে আঁচড়াবেন না, এতে চুল ভেঙে যায়। মোটা ও ফাঁকা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। হেয়ার ড্রায়ার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
– মাসে অন্তত দুই দিন সারা রাত তেল দিয়ে চুলে ম্যাসাজ করুন।
লেখা: ফেরদৌস আরা