শিশুর ভবিষ্যতের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে মা-বাবার ওপর। সব বাবা-মায়েরাই সন্তানের সফলতা নিশ্চিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তবে এখন বিজ্ঞানীরা অভিভাবকদের জন্য একটি নতুন টোটকা দিয়েছেন—শিশুদের ঘরের ছোটখাটো কাজ করতে দেওয়া।
অস্ট্রেলিয়ান অকুপেশনাল থেরাপি জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, গৃহস্থালির কাজের মাধ্যমে শিশুদের স্মৃতিশক্তি উন্নত হয় এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ মানসিক দক্ষতা বিকশিত হয়, যা তাদের ভবিষ্যতে সফল হতে সহায়তা করতে পারে।
গবেষকরা গৃহস্থালির কাজগুলো তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন:
1. নিজের যত্ন
2. অন্যের যত্ন
3. পোষা প্রাণীর যত্ন
৫ থেকে ১৩ বছর বয়সী ২০০ জন শিশুর পিতামাতার সাক্ষাৎকার নিয়ে তারা এই গবেষণা করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, নিজের এবং অন্যের যত্ন নেওয়া শিশুরা সমস্যা সমাধানে দক্ষ এবং তাদের পড়াশোনার ফলাফলও ভালো। তবে পোষা প্রাণীর যত্নের বিষয়ে এখনও কোনো বিশেষ প্রভাব পাওয়া যায়নি।
গবেষকরা জানান, ঘরের ছোটখাটো কাজ করার মূল উদ্দেশ্য ঘর পরিষ্কার রাখা নয়, বরং এটি শিশুদের নানা ভাবে উপকারে আসে। অতীতের গবেষণায়ও দেখা গেছে, যারা ঘরের কাজ করে তারা অধিক স্বাধীন ও সন্তুষ্ট হয়।
হার্ভার্ড গ্রান্ট স্টাডির গবেষণায় প্রাপ্তবয়স্কদের সুখী এবং সফল হওয়ার জন্য দুটি মূল বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে: ভালোবাসা এবং কাজের নৈতিকতা। কাজের নৈতিকতা বিকাশে ঘরের ছোটখাটো কাজের অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্ট্যানফোর্ডের প্রাক্তন ডিন জুলি লিথকোট-হাইমস টেড-টকে বলেছেন, ছোটবেলায় শিশুদের ছোটখাটো কাজ করার অভ্যাস তাদের দায়িত্বশীলতা বাড়ায়, যা পরবর্তীতে কর্মক্ষেত্রে উপকারে আসে।
অস্ট্রেলিয়ান গবেষণায় দেখা গেছে, পোষা প্রাণীর যত্ন শিশুদের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা নাও করতে পারে। এর দুটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা রয়েছে: প্রথমত, পোষা প্রাণীর যত্ন অন্যান্য গৃহস্থালির কাজের মতো চ্যালেঞ্জিং নয়; দ্বিতীয়ত, যেসব শিশু পোষা প্রাণীকে ভালবাসে, তারা আনন্দে সেই কাজ করে, যা অন্যান্য কাজের তুলনায় তাদের কাছে বেশি মজাদার।