আমরা আমাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় ঘুমে কাটাই, কিন্তু অনেকেই ঘুমানোর সঠিক পদ্ধতি জানেন না। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানায়, প্রতি তিন আমেরিকানের মধ্যে একজন রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমাতে পারেন না। যুক্তরাজ্যের ২০২০ সালের ইউগভ জরিপে দেখা গেছে, ১৮ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক দিনে ৬ ঘণ্টারও কম ঘুমান, যা বিশেষজ্ঞদের মতে ‘অপর্যাপ্ত ও অস্বাস্থ্যকর’। ঘুমের অভাব আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ক্লিনিক্যাল হেলথ সাইকোলজিস্ট ড. অ্যালাইনা টিয়ানি বলেন, খারাপ ঘুমের কারণে মনোযোগ কমে যায়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয় এবং অবসাদ ও ক্ষোভের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে, এমনকি শারীরিক অসুস্থতার কারণও হতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু সমস্যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, যেমন নিরাপত্তাহীন এলাকায় বাস করা বা একাধিক চাকরি করা। তবে কিছু অভ্যাস রয়েছে যা আমরা সহজেই পরিবর্তন করতে পারি। চলুন, ঘুমের জন্য সবচেয়ে সাধারণ ভুলগুলো ও সেগুলো এড়ানোর উপায় দেখে নিই:
১. **ঘুমের প্রয়োজনীয়তা জানেন না:** প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রাতের বেলায় ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। আপনার শরীর ও মনের দিকে নজর দিন; যদি অস্থির বা ক্লান্ত বোধ করেন, তবে হয়তো আরও কিছু ঘুমানো প্রয়োজন।
২. **রাতের খাবারের পরে অতিরিক্ত খাওয়া:** অতিরিক্ত খাবার গ্যাস ও অস্বস্তি তৈরি করতে পারে, যা ঘুমাতে বাধা দেয়। আবার, খুব কম খেলে ক্ষুধা লাগতে পারে। তাই নিয়মিত সময় মত খাবার খান।
৩. **বিছানায় ফোন বা টিভি ব্যবহার:** স্ক্রীনের নীল আলো ঘুমাতে দেরি করে। বিছানায় যাওয়ার আগে বই পড়া বা হালকা মিউজিক শোনা উত্তম।
৪. **রাতের খাবারের পর পর কাজ বা ভারী ব্যায়াম:** মস্তিষ্ককে শান্ত হতে দিন। অন্তত ৩০-৬০ মিনিটের জন্য শান্ত পরিবেশে সময় কাটান।
৫. **দিনের বেলা অতিরিক্ত বিশ্রাম:** দিনের বেলা ৩০ মিনিটের বেশি ঘুমানো রাতে ঘুমের প্রভাব ফেলতে পারে।
৬. **বিছানার সীমিত ব্যবহার:** বিছানা শুধু ঘুম ও বিশ্রামের জন্য ব্যবহার করুন। ঘুম না হলে বিছানা ছেড়ে কিছুটা শান্তভাবে কাজ করুন।
৭. **সপ্তাহান্তে ঘুমের ঘাটতি পূরণ:** নিয়মিত ঘুমের অভাব থাকলে সপ্তাহান্তে পূরণ করা যায় না। নিয়মিত ঘুম প্রয়োজন।
৮. **অসময়ে ঘুমের অভ্যাস:** ঘুমের সময় নিয়মিত না থাকলে শরীর অভ্যস্ত হতে অনেক সময় নেয়। একই সময় ঘুমাতে এবং উঠতে চেষ্টা করুন।
৯. **ক্যাফিন ও অ্যালকোহল:** ক্যাফিন ও অ্যালকোহল ঘুমকে বিঘ্নিত করে। দুপুরের পরে কফি এড়িয়ে চলুন।
১০. **ঘুম নিয়ে উদ্বেগ:** ঘুমের চিন্তা উদ্বেগ তৈরি করে, যা ঘুমকে আরও খারাপ করে দেয়। চিন্তা মুক্ত হয়ে বিশ্রাম নিন।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনার ঘুমের মান বাড়ান এবং সুস্থ থাকুন!