বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র রাফিউল হাসনাত। ১৫ জুলাই, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত যায়। সম্ভবত আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম যারা রাজপথে নামি।
১৬ জুলাই ভাটারা থানা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়, যা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে না পেরে তারা পিছু হটে।
১৮ জুলাই আমরা ক্যাম্পাস থেকে রামপুরার দিকে, অর্থাৎ ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির দিকে রওনা হই। নতুন বাজার দিয়ে যাওয়ার সময় দৌড়ানোর একপর্যায়ে আমার ডান পায়ে আঘাত লাগে। সেই অবস্থাতেই ব্র্যাকে পৌঁছে জুনিয়ররা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার পরামর্শ দেন, অন্তত দুই সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে হবে। কিন্তু তীব্র আন্দোলনের কারণে আমি ঘরে বসে থাকতে পারিনি। ৩ আগস্ট পায়ের প্লাস্টার নিজেই খুলে মিরপুর ১০-এর রাস্তায় নেমে পড়ি।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে হাতে ব্যথা অনুভব করি। প্রথমে মনে হয়েছিল, ইটের আঘাত লেগেছে। পরে বুঝতে পারি, ছররা গুলি লেগেছে। পাশে তাকিয়ে দেখি, বন্ধু নাকিবের মুখ থেকেও রক্ত পড়ছে। ওকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা হই, কিন্তু আল হেলাল বিশেষায়িত হাসপাতালের সামনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের গোলাগুলির কারণে আমরা যেতে পারি না। পরে অন্যান্য হাসপাতাল ঘুরে মিরপুরের কিংস্টন হাসপাতালে নাকিবের শরীর থেকে গুলি বের করা হয়। আমার গা থেকেও ছররা গুলি বের করা হয়।
এই আন্দোলন শুরুর আগে আমি দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। এখন মনে হয়, আমি দেশেই থাকতে চাই এবং নিজের হাতে দেশ গড়তে চাই।
দেশের অগ্রগতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলনের সময় আমরা ভালো-মন্দ দুই দিকই দেখেছি। তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিবর্তন দ্রুত দেখতে চাই।