পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত বেলুচিস্তান, দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ। এখানে বাস করা বেলুচরা মূলত স্বাধীনচেতা যাযাবর সম্প্রদায়। ১৮৩৯ সালে ব্রিটিশরা বেলুচদের ভূমি দখল করে এবং পরে এটি পাকিস্তানের অংশ হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রায় ৭০ লাখ বেলুচ পাকিস্তানে এবং প্রায় ২০ লাখ বেলুচ ইরান, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন।
২০২৩ সালে বেলুচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একটি লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। এই ১,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মার্চের নেতৃত্ব দেন মাহরাং বেলুচ।
বেলুচিস্তান প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও, রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে দীর্ঘদিন। পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সংগ্রাম চলছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেলুচিস্তানের সমস্যা তুলে ধরতে মাহরাং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
মাহরাং বেলুচ বেলুচ ইয়াকজেহতি কমিটির প্রধান এবং বোলান মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করা একজন চিকিৎসক। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বেলুচ জনগণের অধিকার রক্ষায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।
চল্লিশের দশক থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ বেলুচিস্তানে বয়ে গেছে। ২০০৩ সাল থেকে নাগরিক নিপীড়ন এবং জাতীয় প্রতিনিধিদের গুমের ঘটনা বেড়ে গেছে। মাহরাংয়ের বাবা আবদুল গাফফার ল্যাঙ্গোভ ২০০৯ সালে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অপহৃত হন এবং ২০১১ সালে মৃত অবস্থায় ফেরত আসেন। ২০১৭ সালে তাঁর ভাইকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মাহরাং বেলুচ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রতি বিশ্বাসী এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। ২০২৩ সালের মার্চে ইসলামাবাদে মাহরাং ও অন্যান্য বেলুচ কর্মীরা রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হয়রানি, শারীরিক আক্রমণ এবং মৃত্যুর হুমকির সম্মুখীন হন। রক্ষণশীল অঞ্চলে বেলুচ নারীরা দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, যা হাজার হাজার নারীদের গণপ্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। মাহরাংয়ের নেতৃত্বে সম্প্রতি উত্তাল বেলুচিস্তান সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা, ট্রুথ ডিগ, দ্য গার্ডিয়ান