**গবেষণার বিষয়টা কী? সহজভাবে বুঝুন**
আবুল বাশার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষক ও প্রভাষক, চিংড়ি চাষ থেকে নির্গত গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ে গবেষণা করেছেন। চিংড়ি চাষের সময় কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড নামে ক্ষতিকর গ্যাস বের হয়, যা পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। তাঁর গবেষণায় দেখা গেছে, এই গ্যাস তৈরিতে কিছু অণুজীব—ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া—গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে মজার ব্যাপার হলো, এই অণুজীবদের কিছু অংশ গ্যাস তৈরি করলেও, অন্যরা তা ভাঙতে সক্ষম।
বাশার গবেষণা করেছেন, কোন অণুজীব গ্যাস তৈরি করে আর কোনগুলো তা ভাঙতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস ভাঙতে সক্ষম অণুজীবের ব্যবহার এবং চাষপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে এই গ্যাস নিঃসরণ কমানো সম্ভব। এর ফলে চিংড়ি চাষ আরও পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠবে।
এই গবেষণার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। ৭ নভেম্বর মোনাকোর মন্টে কার্লো অপেরা হাউসে ‘প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে মোনাকোর রাজপুত্র দ্বিতীয় আলবার্ট তাঁর হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন।
আইপিসিসি (জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তসরকারি প্যানেল) তরুণ গবেষকদের এই পুরস্কার দেয়। এ বছর ৪৫২ প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে চূড়ান্তভাবে ২৪ জনকে বেছে নেওয়া হয়, এবং প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি গবেষক এই পুরস্কার জিতেছেন।
**গবেষণার পদ্ধতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা**
বাশারের গবেষণায় ডেনিশ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ড্যানিডা) অর্থায়ন করেছে এবং কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর গবেষণায় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে। গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি ও জিন বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, পানির গুণাগুণ কীভাবে গ্যাস উৎপাদনে প্রভাব ফেলে।
আবুল বাশার বলেন, **‘আমার গবেষণার লক্ষ্য হলো, গ্রিনহাউস গ্যাস ভাঙতে সক্ষম অণুজীব শনাক্ত করা এবং চাষপদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব পরিবর্তন আনা। এই সম্মাননা আমাকে আরও ভালো সমাধান খুঁজতে অনুপ্রাণিত করবে।’**
তিনি বর্তমানে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ পিএইচডি প্রোগ্রামের অধীনে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 2022 সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।