প্রকৃতির নিয়মেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেহ ও মনের কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে। তবে যদি এসব পরিবর্তন সময়ের আগেই দেখা দেয়, তবে ধরে নেওয়া যায়, আপনি বয়সের আগেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন। কী কী লক্ষণ দেখে তা বুঝবেন?
**যা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা**
বার্ধক্যের লক্ষণগুলো শুধু বয়সের জন্য নয়; তরুণ থাকতে সঠিক বিশ্রাম, যথাযথ ঘুম, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চা যেমন জরুরি, তেমনি চাপমুক্ত জীবনযাপনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা পেশাগত বা পারিবারিক জীবনে প্রচণ্ড চাপে থাকেন বা দীর্ঘসময় ধরে প্রচণ্ড কাজের মধ্যে ডুবে থাকেন, তারা বয়সের আগেই বার্ধক্যের ছাপ পেতে পারেন। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি রোগ, জিনগত কারণ এবং ধূমপান বা মাদকও অকাল বার্ধক্যের কারণ হতে পারে। স্কয়ার হাসপাতালের ডা. তাসনোভা মাহিন এভাবেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন।
**লক্ষণগুলো কী কী**
সাধারণত ৪০-এর কাছাকাছি বয়সে আমাদের দেহে বয়সজনিত পরিবর্তন শুরু হয়। কিন্তু যদি ৪০-এর আগেই এসব লক্ষণ প্রকাশ পায়, তবে জীবনধারা নিয়ে নতুন করে ভাবা জরুরি।
1. **শারীরিক কর্মক্ষমতা হ্রাস**
যে কাজে আপনি অভ্যস্ত, সেটি করতে হঠাৎ করে ক্লান্তি বা কষ্ট অনুভব করলে এটি অকাল বার্ধক্যের ইঙ্গিত হতে পারে। পেশির জোর কমে যাওয়া, সিঁড়ি ভাঙতে কষ্ট হওয়া বা শরীরচর্চার উদ্যম হারানো এর মধ্যে পড়তে পারে।
2. **মানসিক পরিবর্তন**
আপনার চিন্তা করার ক্ষমতা কমে গেলে, মনোযোগ হারালে বা অল্পতেই বিরক্ত হলে বুঝতে হবে, মনেরও বয়স বেড়ে যাচ্ছে।
3. **স্মৃতিভ্রম**
বয়সের সঙ্গে স্মৃতিভ্রম স্বাভাবিক। তবে বয়সের আগেই যদি তা ঘটে, এবং নতুন কিছু শিখতে কষ্ট হয়, তাহলে এটি বার্ধক্যের লক্ষণ হতে পারে।
4. **ত্বকের পরিবর্তন**
অল্প বয়সেই ত্বকে ভাঁজ পড়া বা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া অকাল বার্ধক্যের ইঙ্গিত হতে পারে।
5. **চুলের পরিবর্তন**
চুল পেকে যাওয়া বা টাক পড়া বার্ধক্যের চিহ্ন হতে পারে। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে এ রকম ইতিহাস থাকলে এটি স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে।
**সতর্কতা ও পরামর্শ**
বার্ধক্যের ছাপ ঠেকাতে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলুন। পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চা জরুরি। জীবনের চাপ কমিয়ে চাপমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন। তবে জীবনধারা স্বাভাবিক থাকার পরও অকাল বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিছু শারীরিক অসুস্থতাও এ ধরনের পরিবর্তনের কারণ হতে পারে।