সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব শিশু বেশি সক্রিয়, তাদের বেড়ে ওঠায় এটি কোনো না কোনোভাবে প্রভাব ফেলবে। সাধারণভাবে দুটো প্রধান বিষয় সামনে আসে: এক. শিশুর আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে, দুই. শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতে পারে।প্রথম বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বললে, যেসব শিশুর ছবি বা ভিডিও নিয়মিত শেয়ার করা হয়, তাদের মধ্যে একসময় একধরনের আত্মকেন্দ্রিকতা বা নার্সিসিজম জন্মাতে পারে। ধীরে ধীরে তারা নিজেও স্মার্টফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সেই আসক্তি থেকে বের করে আনা কঠিন হয়ে যায়। ফলে, শিশুর মধ্যে মনোযোগের ঘাটতি দেখা দেয়, অন্যের প্রতি মমত্ববোধও কমে যায়। তারা কেবল নিজেকে কেন্দ্র করেই থাকতে ভালোবাসে।
একই সঙ্গে শিশুর নিরাপত্তা সবসময় ঝুঁকিতে থাকে। কারণ, তার বিভিন্ন ছবি বা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে, যেকোনো দুষ্কর্ম পরিকল্পনাকারীর জন্য শিশু সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সহজ হয়ে যায়। অপহরণের চিন্তা থাকলে, তারা ঘরে বসেই শিশুর যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এছাড়া, সামাজিক মাধ্যমে শিশুরা বুলিংয়ের শিকার হতে পারে, যা তাদের শৈশবকে বিষাদময় করে তুলতে পারে, এবং অনেক ক্ষেত্রেই মা–বাবা তা বুঝতে পারেন না। এসব কারণে শিশুর বেড়ে ওঠা স্বাভাবিক থাকে না।
তাই বাবা–মা যদি প্রফেশনাল ব্লগার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরও হন, তাহলেও শিশুদের নিয়ে কনটেন্ট বানানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। এমনকি যদি কনটেন্ট শিশুবিষয়কও হয়, সেটি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি করা ভালো। শিশুদের সরাসরি ক্যামেরার সামনে আনা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে হলে, যতটা সম্ভব তাদের অনলাইন উপস্থিতি সীমিত রাখা জরুরি।