### রাজধানীতে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
ঢাকা শহরে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত তিন মাসে মোট আটজনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গত বছরও পাঁচজন জিকা রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন, যারা বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত।
#### কীভাবে ছড়ায়:
– **এডিস মশার কামড়:** এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ায়।
– **রক্তের মাধ্যমে:** সংক্রামিত রক্তের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।
– **গর্ভাবস্থায়:** গর্ভাবস্থায় মায়ের কাছ থেকে শিশুর শরীরে ভাইরাসটি পৌঁছাতে পারে।
#### লক্ষণসমূহ:
– **লালচে র্যাশ:** চামড়ায় লালচে দানার মতো ছোপ।
– **মাথাব্যথা ও চোখ লালচে হওয়া:** মাথাব্যথা এবং চোখ লালচে হওয়া।
– **মাংসপেশি ও গাঁটে ব্যথা:** মাংসপেশি ও গাঁটে ব্যথা।
– **বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষণ নেই:** ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
#### প্রতিরোধের উপায়:
– **মশা নিয়ন্ত্রণ:** এডিস মশা নির্মূল করতে হবে এবং মশার কামড় এড়াতে হবে।
– **পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:** বাড়ি ও আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
– **মশারোধী ক্রিম:** মশারোধী ক্রিম ব্যবহার করুন এবং লম্বা হাতার পোশাক পরিধান করুন।
– **পানি জমিয়ে না রাখা:** কনটেইনারে পানি জমিয়ে রাখা থেকে বিরত থাকুন।
#### চিকিৎসা:
– **বিশ্রাম:** আক্রান্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
– **পানি ও তরল জাতীয় খাবার:** প্রচুর পানি ও তরল-জাতীয় খাবার খেতে হবে।
– **ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ:** জ্বর ও ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে।
– **জরুরি চিকিৎসা:** রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কাছের সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করাতে হবে।
#### গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য:
২০১৪ সালে এডিস মশাবাহিত জিকা রোগ দেশে প্রথম শনাক্ত হয়। আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা নিশ্চিত করেছেন যে, ঢাকায় ধানমন্ডি, শ্যামলী এবং বনানীর বাসিন্দারা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত। তারা যে মশার নমুনা সংগ্রহ করেছেন তাতেও জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে।
জিকা ভাইরাসজনিত রোগটি গর্ভবতী মা সংক্রমিত হলে গর্ভের সন্তানের মাইক্রোসেফালির ঝুঁকি থাকে, যা মাথার গঠন ক্ষতিগ্রস্ত করে। বয়স্ক মানুষেরা আক্রান্ত হলে গুলেনবারি সিনড্রোমের ঝুঁকি থাকে, যা চলনশক্তি হারানোর কারণ হতে পারে। গবেষকেরা জিকার দুটি ধরন শনাক্ত করেছেন: একটি আফ্রিকান এবং অন্যটি এশিয়ান। ঢাকায় পাওয়া ভাইরাসটি এশিয়ান ধরন।
**তথ্যসূত্র:** আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি গবেষণা