চীন আজ বুধবার একটি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালিয়েছে। আজ সকালে প্রশান্ত মহাসাগরে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যা দেশটির সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি কয়েক দশকের মধ্যে চীনের প্রথম আইসিবিএম পরীক্ষা। বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৮০ সালের পর আন্তর্জাতিক জলসীমায় চীনের এটি সম্ভবত প্রথম আইসিবিএম পরীক্ষা।
গবেষণা অনুসারে, গত কয়েক বছরে চীন তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গত অক্টোবরে চীনকে সতর্ক করা হয়েছিল, যে তারা নিজেদের ধারণার চেয়ে দ্রুতগতিতে পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত চীনের ৫০০-এর বেশি কার্যকর পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা এক হাজারেরও বেশি হয়ে যেতে পারে।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, রকেট বাহিনী আইসিবিএমটি ছুঁড়ে দিয়েছে, এবং এটি প্রশান্ত মহাসাগরে ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে নিক্ষিপ্ত হয়। পরীক্ষায় একটি নকল ওয়ারহেড ছিল, যা নির্ধারিত অঞ্চলে পড়েছে।
কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের ফেলো অঙ্কিত পান্ডা বলেছেন, চীন সাধারণত নিজেদের আকাশসীমার মধ্যে এই ধরনের পরীক্ষা চালায়, তাই এটি বেশ অস্বাভাবিক। তিনি জানান, এই পরীক্ষা চীনের আধুনিক পারমাণবিক সক্ষমতা নিশ্চিত করে।
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আজকের আইসিবিএম পরীক্ষা তাদের বার্ষিক প্রশিক্ষণ পরিকল্পনার অংশ। তারা দাবি করেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও আচরণ অনুযায়ী করা হয়েছে এবং কোনো দেশ বা লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দেশ্য করে পরিচালিত হয়নি।
গত নভেম্বরে মার্কিন এবং চীনা নেতাদের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল, কিন্তু জুলাইয়ে ওয়াশিংটনকে অস্ত্র বিক্রি করার কারণে বেইজিং এই আলোচনা স্থগিত ঘোষণা করেছে।
স্টকহোম ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুসারে, চীন ওয়ারহেডের দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। রাশিয়া প্রথম এবং যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়। চলতি বছরে চীন তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট ৭.২ শতাংশ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছে, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেট।