এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করছে এবং মার্কিন বাহিনীকে প্রস্তুত করার কাজও শুরু করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্রের ভাবনা একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দিকে পরিবর্তিত হয়েছে, যা হচ্ছে সাশ্রয়ী খরচে অধিক অস্ত্র তৈরি করা। ক্ষেপণাস্ত্রশিল্পের এক প্রধান নির্বাহী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কম খরচে বড় পরিমাণে অস্ত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে।
চীন যে ধরনের অস্ত্রসমৃদ্ধ জাহাজ তৈরি করছে, তার প্রতিরোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সস্তা, কিন্তু কার্যকর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক ইউয়ান গ্রাহাম বলেন, চীনের আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটি স্বাভাবিক। তবে, পেন্টাগন বা চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ‘কুইকসিঙ্ক’ নামের বিশেষ অস্ত্র পরীক্ষায় জোর দিয়েছে। কুইকসিঙ্ক একটি সাশ্রয়ী বোমা, যা কম খরচে জিপিএস নির্দেশক ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। গত মাসে মেক্সিকো উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী বি-২ স্টেলথ বোমারু দিয়ে কুইকসিঙ্ক ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সুবিধা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের কুইকসিঙ্কের মতো অস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে সেই পার্থক্য কমিয়ে আনা সম্ভব। এতে চীনের যুদ্ধজাহাজ ঝুঁকিতে পড়বে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে সংঘাত হলে চীনের যুদ্ধজাহাজগুলোর জন্য ঝুঁকি বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইনে সামরিক মহড়ার সময় তাদের নতুন টাইফোন মোবাইল মিসাইল ব্যাটারি মোতায়েন করেছে। সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করে তারা এসএম-৬ বা টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
এ ধরনের অস্ত্র তৈরি করা সহজ এবং এক দশকেরও বেশি পুরনো প্রযুক্তি ও নকশার ওপর ভিত্তি করে এগুলো প্রস্তুত করা হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে ক্ষেপণাস্ত্রের দৌড়ে দ্রুত ধরতে সক্ষম হবে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কতটা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে, তা জানা যায়নি, তবে আগামী পাঁচ বছরে ৮০০টির বেশি এসএম-৬ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বিশ্লেষক ইউয়ান গ্রাহাম বলেন, চীনের লক্ষ্য হলো মার্কিন নৌবাহিনীর অস্ত্রের গতিবিধি সীমিত করা।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, যেমন লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের ব্যবহৃত সস্তা অস্ত্রের মতো।