আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা দাবিতে আজ বুধবারও ভারতের লোকসভার দুই কক্ষের অধিবেশন সারা দিনের জন্য মুলতবি হয়ে গেছে। ঘুষ কাণ্ড ছাড়াও মণিপুর সংকট, সম্ভলের হিংসাসহ অন্যান্য মুলতবি প্রস্তাবের কোনো গৃহীত হয়নি, যার ফলে বিরোধীরা সভার কাজ চলতে বাধা প্রদান করে। এর ফলে, সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন সারা দিনের জন্য মুলতবি ঘোষণা করা হয়। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম তিন দিনেই সংসদের কার্যক্রম বিঘ্নিত হলো।
আদানি প্রসঙ্গে বিরোধীরা আগেও সংসদে সরব হয়েছিল, তবে কোনো কক্ষেই এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে দেওয়া হয়নি। হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা এবং ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সেবি চেয়ারম্যান মাধবী পুরী বুচকে সংসদীয় কমিটিতে হাজির করারও সুযোগ হয়নি। এমনকি সংসদের কার্যবিবরণী থেকে ‘আদানি’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
গত ১০ বছরে বিরোধীরা কোনো মুলতবি প্রস্তাবই সংসদে আলোচনার জন্য মঞ্জুর হতে দেখেনি, এমনকি ভারত-চীন সংঘর্ষের পরও সেই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। আদানি গোষ্ঠী এবং তাদের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের অভিযোগ নিয়ে সরকার আলোচনা করতে রাজি না থাকায় বিরোধীরা তাঁদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
বিরোধীরা দাবী করছেন, আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সখ্যের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসার পর, আন্তর্জাতিক আদালত এবং বিভিন্ন দেশের পদক্ষেপের পর গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে বিতর্ক আরো গভীর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কেনিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে আদানি গোষ্ঠীকে ঘিরে তদন্ত চলছে।
আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’জ ও ফিচ আদানি গোষ্ঠীর বেশ কিছু সংস্থার রেটিং ‘নেতিবাচক’ করে দিয়েছে, ফলে বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে গোষ্ঠীটির জন্য বাধা সৃষ্টি হতে পারে। বিরোধীদের মতে, আদানি গোষ্ঠীর কারণে ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সংসদের ভেতর ও বাইরে আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। বিরোধীরা চান, সরকার সংসদে আদানি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখুক, কিন্তু সরকার এখনও নীরব। বিজেপি অবশ্য আদানির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, এবং তারা এ বিতর্ককে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটি বৈদেশিক চক্রান্ত হিসেবে তুলে ধরেছে। আইনজীবী মুকুল রোহতগি আদানি গোষ্ঠীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে কোনো ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ নেই এবং প্রকাশিত খবর বিভ্রান্তিকর।