দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০০:৩৮

ভারতের কূটনৈতিক উদ্বেগের কারণ শেখ হাসিনা

একজন পুলিশ সদস্য বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতির পাশ দিয়ে হাঁটছেন।

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে পালিয়ে ভারতে চলে যান। এখন বিশ্লেষকরা বলছেন, হাসিনা ভারতের জন্য কূটনৈতিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন।

১৫ বছরের শাসনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। তবে, ৭৬ বছর বয়সী হাসিনাকে ফিরিয়ে আনলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের অবস্থান ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে চীনের সাথে আধিপত্য বিস্তারের দ্বৈরথ চলাকালে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের টমাস কিন এএফপিকে বলেন, ‘ভারত স্পষ্টতই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চাচ্ছে না। এতে এই অঞ্চলের নেতাদের কাছে একটি বার্তা যাবে যে ভারত আপনাকে রক্ষা করবে না, যা ভারতের জন্য খুব ইতিবাচক হবে না।’

গত বছর মালদ্বীপে এমন এক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন যিনি নির্বাচিত হওয়ার পর কৌশলগতভাবে বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকেছেন। হাসিনার পতনের ফলে ভারত তার ঘনিষ্ঠ মিত্রকে হারিয়েছে। অন্যদিকে, হাসিনার অধীনে নির্যাতিতদের অনেকেই ভারতকে দায়ী মনে করেন। ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কূটনীতিও বৈরিতা বাড়িয়েছে।

মোদি গত বছর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বাংলাদেশি হিন্দুদের রক্ষার জন্য ইউনূসকে বারবার অনুরোধ করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এসব ঘটনার অতিরঞ্জিত বিবরণ বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারত হাসিনাকে সমর্থন করে ‘তার সব ফল এক ঝুড়িতে রেখে দিয়েছে’। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়, কিন্তু নিজেদের স্বার্থের বিনিময়ে নয়।’

অথচ, আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যার সময় বাংলাদেশের অনেকেই ভারতকে দায়ী করেছেন। বাংলাদেশি অন্তর্বর্তী সরকার এখনো শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে উত্থাপন করেনি। তবে, কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের কারণে অন্য দেশে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালের দ্বিপক্ষীয় প্রত্যাবাসন চুক্তির অধীনে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক চরিত্রের অপরাধের কারণে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের সুযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী এএফপিকে বলেন, হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চাপ দেওয়ার চেয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষা বাংলাদেশ এবং ভারতের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো বুদ্ধিমান সরকার বুঝতে পারবে, হাসিনার ভারতে থাকার বিষয়টিকে ইস্যুতে পরিণত করা তাদের জন্য কোনো সুবিধা তৈরি করবে না।’

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট