বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের সরকারের জন্য একটি কৌশলপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকায় কর্মরত সাবেক কূটনীতিকরা, যাদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রদূতরাও রয়েছেন, এই কৌশলপত্র তৈরি করেছেন। সম্প্রতি ঢাকায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বলে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সোমবার প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সম্প্রতি ঢাকায় কর্মরত সাবেক হাইকমিশনার ও অন্যান্য অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিন পরিবর্তনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান সম্পর্ক মেরামতের কৌশল খুঁজছে।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্ট সহিংস বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান, যা তার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটায়। পাকিস্তান মনে করছে, হাসিনার শাসনকালে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পরিবর্তে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা সরকারের কাছে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। কৌশলপত্রে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্কের রোডম্যাপ উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের পরামর্শ, পাকিস্তানকে একটি শান্ত কৌশল অনুসরণ করতে হবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা উল্লেখ করেছেন যে, পাকিস্তানকে বাংলাদেশকে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক যেমনি হোক, পাকিস্তানকে তার নিজস্ব পথে চলতে হবে।
তারা আরও প্রস্তাব করেছেন, পাকিস্তান একটি বিশেষ দূত বা বাংলা ভাষায় দক্ষ একজন হাইকমিশনার নিয়োগ করতে পারে। একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, “আমাদের ঢাকাকে ‘এ (শ্রেণি)’ স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, যার মানে হাইকমিশনার পদে একজন যোগ্য কূটনীতিক নিয়োগ দেওয়া উচিত।”
শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে বহু বছরের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ। এছাড়া সাম্প্রতিক ওআইসি সম্মেলনের পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবরাও বৈঠক করেছেন।