শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্টের আগাম নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের আগাম নির্বাচনে আজ, বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ চলছে।
দেশটির নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েক দেশটির পার্লামেন্টে নিজের জোটের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে এই আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। কারণ, গত নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোট মাত্র তিনটি আসন পায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন হবে অনূঢ়ার রাজনৈতিক শক্তি যাচাইয়ের একটি বড় পরীক্ষা। যদি তাঁর জোটের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তবে এটি তাঁকে আরও শক্তিশালী করবে এবং তাঁর অর্থনৈতিক ও অন্যান্য নীতি বাস্তবায়নে ত্বরান্বিত করবে। তবে, যদি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাশিত না হয়, তাহলে এটি তাঁর নীতি বাস্তবায়নে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে পারে।
ভোটগ্রহণ আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হবে এবং শুক্রবার সকালে ফলাফল জানা যেতে পারে।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে মোট ২২৫টি আসন রয়েছে, এর মধ্যে ১৯৬টি আসনে সরাসরি ভোট দেওয়া হয়। বাকি ২৯টি আসন ‘জাতীয়ভিত্তিক আসন’, যেগুলো রাজনৈতিক দলগুলো ১৯৬টি নির্বাচনী আসনে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে পায়। এই ২৯টি আসনের প্রার্থীদের নাম দলগুলোকে ভোটের আগে অগ্রাধিকারভিত্তিক তালিকা হিসেবে জমা দিতে হয়, তবে পরে নতুন নামও অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব।
এবারের নির্বাচনে ৮ হাজার ৮৮০ জনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এবং ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি।
২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে পড়লে নাগরিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে যায়, যা ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়। ওই সময়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দেশ থেকে পালিয়ে যান। প্রায় দুই বছর পর, গত সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বামপন্থী রাজনীতিক অনূঢ়া জয়ী হন। তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আজকের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।
শ্রীলঙ্কায় সর্বশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের আগস্টে, যা ছিল পাঁচ বছরের মেয়াদে। ফলে, নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজকের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।